জোবায়েদ হত্যা
প্রেমের জট থেকে নৃশংস পরিকল্পনা, দায় স্বীকার করেছে ছাত্রী ও মাহির
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩:১২, ২১ অক্টোবর ২০২৫

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা ও আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জোবায়েদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা ও আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জোবায়েদ হোসেন হত্যার ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে পুলিশ। তদন্তে জানা গেছে, দীর্ঘ প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। মূল অভিযুক্ত ওই ছাত্রী এবং তার সাবেক প্রেমিক মাহির রহমান হত্যার দায় স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, নিহত জোবায়েদ হোসেন ছিলেন এই ছাত্রীর টিউশনির শিক্ষক। নয় বছর ধরে মাহিরের সঙ্গে চলা প্রেমের সম্পর্কের ইতি টানেন ওই ছাত্রী। এরপর তার জোবায়েদের সঙ্গে সম্পর্ক হয়। সম্প্রতি জোনায়েদের প্রতি অনাগ্রহ প্রকাশ করেন এবং বিষয়টি প্রাক্তন প্রেমিক মাহির রহমানকে জানান। এরপরই দু’জনের মধ্যে পরিকল্পনা হয় জোবায়েদকে “চিরতরে সরিয়ে দেওয়ার”।
ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, গত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি তারা হত্যার নীলনকশা তৈরি করে। ২৫ সেপ্টেম্বর দু’জন মিলে দুটি সুইচগিয়ার ক্রয় করে এবং বিস্তারিত পরিকল্পনা নেয় কীভাবে দুই দিক থেকে আক্রমণ করা হবে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, গত ১৯ অক্টোবর সন্ধ্যার আগে আরমানিটোলার নুরবক্স রোডের রৌশান ভিলার নিচে টিউশনিতে যাওয়ার পথে জোবায়েদকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে মাহির রহমান। তার সঙ্গে সহযোগী হিসেবে ছিল বন্ধু ফারদিন আহম্মেদ আয়লান। অভিযুক্ত ছাত্রী পুরো পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে তাদের তথ্য ও অবস্থান সরবরাহে সহায়তা করেন।
পুলিশের ভাষ্যমতে, এই হত্যাকাণ্ড শুধুমাত্র প্রেমঘটিত নয়, বরং প্রতিশোধ ও মানসিক অস্থিরতার ফলেও তা ভয়াবহ রূপ নেয়। বংশাল থানায় দায়ের করা মামলায় তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই তাদের আদালতে তোলা হয়েছে এবং আরও তথ্য উদঘাটনে রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।
এ ঘটনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শোক ও ক্ষোভের ছায়া নেমে এসেছে। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা দাবি করেছেন, “এটি শুধুমাত্র প্রেমঘটিত নয়, বরং পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।” বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও বলেছে, তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।