পাঁচ বছরে গুগলের কার্বন নিঃসরণ বেড়েছে ৫১%
সমাজকাল
প্রকাশ: ১৪:২৩, ২ জুলাই ২০২৫
পাঁচ বছরে গুগলের কার্বন নিঃসরণ বেড়েছে ৫১%, এআই প্রযুক্তির চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে বেড়েছে বিদ্যুৎ ব্যবহার ও স্কোপ-৩ নিঃসরণ।
প্রযুক্তি ডেস্ক :
এআই প্রযুক্তির ব্যাপক বিস্তার গুগলের বিদ্যুৎ চাহিদা ও কার্বন নিঃসরণে বড় চাপ ফেলেছে। বিগত পাঁচ বছরে গুগলের নিঃসরণ বেড়েছে ৫১ শতাংশ। কোম্পানিটি নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ বাড়ালেও, লক্ষ্য অর্জনে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির উত্থান যেমন বিশ্বকে বদলে দিচ্ছে, তেমনি তা পরিবেশের ওপর ফেলছে বিরূপ প্রভাব। প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগল জানিয়েছে, তাদের সামগ্রিক কার্বন নিঃসরণ ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২৪ সাল নাগাদ ৫১ শতাংশ বেড়েছে। শুধুমাত্র ২০২৪ সালেই নিঃসরণ বেড়েছে ১১ শতাংশ। গুগলের টেকসই উন্নয়ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্কোপ-৩ নিঃসরণ অর্থাৎ সাপ্লাই চেইন সংশ্লিষ্ট নিঃসরণ এক বছরে বেড়েছে ২২ শতাংশ।
এআই মডেল চালানোর জন্য যে পরিমাণ কম্পিউটিং শক্তি প্রয়োজন, তা মেটাতে ডাটা সেন্টারগুলোতে বিদ্যুৎ ব্যবহারে লাফিয়ে বেড়েছে। গুগলের বিদ্যুৎ ব্যবহার এক বছরে বেড়েছে ২৭ শতাংশ। প্রতিষ্ঠানটির জেমিনি এবং ওপেনএআইয়ের জিপিটি-৪-এর মতো লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল পরিচালনায় এসব সেন্টারের বড় ভূমিকা রয়েছে।
আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা (IEA) আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, ২০২৬ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে ডাটা সেন্টারগুলোর বিদ্যুৎ ব্যবহার বেড়ে দাঁড়াবে এক হাজার টেরাওয়াট ঘণ্টা, যা জাপানের বর্তমান বার্ষিক বিদ্যুৎ চাহিদার সমান। গবেষণা সংস্থা SemiAnalysis পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে এই খাতই বিশ্বের ৪.৫% বিদ্যুৎ ব্যবহার করবে।
গুগল জানায়, কম-কার্বন শক্তির উৎস পাওয়া এখন আরও কঠিন হয়ে পড়েছে, বিশেষ করে ছোট মডিউলার নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর (SMRs) ও উন্নত ভূ-তাপীয় প্রযুক্তি এখনও বাণিজ্যিকভাবে ব্যাপকভাবে চালু হয়নি। ফলে ২০৩০ সালের নির্ধারিত টেকসই লক্ষ্য অর্জন কঠিন হতে পারে বলে প্রতিষ্ঠানটি মনে করছে।
তবে পরিস্থিতি বদলাতে গুগল বাড়িয়েছে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ। ২০১০ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি ১৭০টিরও বেশি চুক্তির মাধ্যমে ২২ গিগাওয়াট পরিচ্ছন্ন জ্বালানি ক্রয় করেছে। শুধু ২০২৪ সালেই যুক্ত হয়েছে নতুন ২.৫ গিগাওয়াট উৎপাদন সক্ষমতা এবং নতুন করে আরও ৮ গিগাওয়াটের বিদ্যুৎ ক্রয়ের চুক্তি হয়েছে।
পরিবেশবান্ধব পদক্ষেপ হিসেবে, প্রতিষ্ঠানটি নির্ধারিত সময়ের আগেই সব নতুন পণ্যের জন্য প্লাস্টিকমুক্ত প্যাকেজিং বাস্তবায়ন করেছে।
তবে সৃষ্ট সমস্যার সমাধানও এআই হতে পারে বলে আশাবাদী গুগল। কোম্পানির লক্ষ্য, ২০৩০ সালের মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে বছরে এক গিগাটন কার্বন নিঃসরণ কমানো। সৌর প্যানেল স্থাপনের উপযুক্ত স্থান চিহ্নিত করা, শহরভিত্তিক জ্বালানি ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা আনা, এবং বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের মতো কার্যক্রমে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে তারা।