কিডনিতে পাথর হলে পেঁপে খাওয়া কতটা নিরাপদ? কারা একেবারেই এড়িয়ে চলবেন এই ফল
স্বাস্থ্য ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭:২৪, ২০ আগস্ট ২০২৫ | আপডেট: ১৪:৩৮, ২১ আগস্ট ২০২৫

পুষ্টিগুণে ভরপুর ফলগুলির মধ্যে অন্যতম পেঁপে। ভিটামিন এ, সি, ই, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এবং ফাইবারে সমৃদ্ধ এই ফল হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। তবে চিকিৎসকরা সতর্ক করেছেন, সব মানুষের জন্য এটি সমান উপকারী নয়। বিশেষ কিছু স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগা মানুষের ক্ষেত্রে নিয়মিত পেঁপে খাওয়া বরং বিপদের কারণ হতে পারে।
কিডনিতে পাথরের ঝুঁকি
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাদের একবার কিডনিতে পাথর হয়েছে, তাদের জন্য অতিরিক্ত কাঁচা বা আধপাকা পেঁপে খাওয়া বিপজ্জনক হতে পারে। কারণ, পেঁপেতে থাকা ভিটামিন সি শরীরে অক্সালেটে পরিণত হয়, যা ক্যালশিয়ামের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ক্যালশিয়াম অক্সালেট তৈরি করে। এটিই কিডনির পাথরের অন্যতম প্রধান কারণ। তাই কিডনির রোগীদের ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবার, বিশেষত কাঁচা পেঁপে খাওয়ার ক্ষেত্রে সচেতন থাকতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ইচ্ছেমতো খাওয়া ঠিক নয়।
গর্ভাবস্থায় বিপজ্জনক
অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য কাঁচা বা আধপাকা পেঁপে একেবারেই নিরাপদ নয়। এতে থাকা ল্যাটেক্স ও প্যাপাইন গর্ভাশয়ে সংকোচন ঘটাতে পারে, যা হঠাৎ প্রসববেদনা বা গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই চিকিৎসকরা গর্ভাবস্থায় পেঁপে পুরোপুরি এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন।
অ্যালার্জি ও শ্বাসকষ্টের সম্ভাবনা
গবেষণায় দেখা গেছে, পেঁপেতে থাকা চিটিনেজ এবং ল্যাটেক্সের কারণে অনেকের অ্যালার্জি হতে পারে। প্রথমে হাঁচি, পরে শ্বাসকষ্ট বা শ্বাসযন্ত্রে প্রদাহও দেখা দিতে পারে। যাঁদের ল্যাটেক্সে অ্যালার্জি আছে, তাঁদের জন্য বিশেষত কাঁচা পেঁপে একেবারেই অনুপযুক্ত।
হৃদরোগীদের জন্য সতর্কতা
কাঁচা পেঁপেতে সামান্য সায়ানোজেনিক যৌগ থাকে, যা শরীরে হাইড্রোজেন সায়ানাইড নির্গত করতে পারে। এর ফলে অনিয়মিত হৃদস্পন্দনের ঝুঁকি থাকে। হার্টের রোগীদের তাই কাঁচা পেঁপে খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
থাইরয়েড রোগীদের ঝুঁকি
হাইপোথাইরয়েডে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্যও কাঁচা পেঁপে সমস্যার কারণ হতে পারে। এতে থাকা কিছু উপাদান থাইরয়েড হরমোনের কার্যকারিতা ব্যাহত করতে পারে। এর ফলে অবসাদ, ওজন বৃদ্ধি প্রভৃতি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
পেঁপে একটি পুষ্টিগুণে ভরা ফল হলেও সবার জন্য সমান উপকারী নয়। কিডনির পাথর, গর্ভাবস্থা, অ্যালার্জি, হৃদরোগ বা থাইরয়েডের সমস্যায় ভোগা মানুষেরা বিশেষ সতর্ক থাকবেন। পরিমিত পরিমাণে পাকা পেঁপে খাওয়া যেতে পারে, তবে নিয়মিত বা অতিরিক্ত খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
কোনো খাবারই অতিরিক্ত খাওয়া উচিত নয়। পরিমিত খাবারই সুস্থতার আসল চাবিকাঠি।