শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

| ৩ কার্তিক ১৪৩২

পাকিস্তানের সামরিক ঘাঁটিতে আত্মঘাতী হামলা, নিহত ১২

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭:৫৬, ১৭ অক্টোবর ২০২৫

পাকিস্তানের সামরিক ঘাঁটিতে আত্মঘাতী হামলা, নিহত ১২

আফগানিস্তানের সঙ্গে সাময়িক যুদ্ধবিরতির মধ্যেই ফের রক্তাক্ত হয়ে উঠেছে পাকিস্তানের সীমান্ত এলাকা। খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের উত্তর ওয়াজিরিস্তানে শুক্রবার এক আত্মঘাতী হামলায় কেঁপে উঠেছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর একটি ঘাঁটি। স্থানীয় সময় বিকেলে সংঘটিত ওই হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন—এর মধ্যে রয়েছেন ছয় পাকিস্তানি সেনা ও ছয় সন্ত্রাসী।

আরব নিউজের বরাতে জানা গেছে, উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলার খাদি দুর্গে বিস্ফোরকভর্তি একটি গাড়ি ঢুকে পড়ে সেনা ঘাঁটির মূল ফটকে। মুহূর্তেই ঘটে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। এরপর শুরু হয় তীব্র বন্দুকযুদ্ধ। মির আলী পুলিশ কন্ট্রোল রুমের কর্মকর্তা মেরাজ খান জানান, ‘নিরাপত্তা বাহিনী দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানিয়ে হামলাকারীদের প্রতিহত করে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের ছয়জন সৈনিক শহীদ হয়েছেন এবং এক ডজনেরও বেশি আহত।’

তিনি আরও বলেন, অভিযানে নিরাপত্তা বাহিনী ছয়জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করতে সক্ষম হয়। এলাকাটি বর্তমানে ঘিরে ফেলা হয়েছে এবং আশপাশে সম্ভাব্য হুমকি মোকাবিলায় তল্লাশি অভিযান চলছে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য জানায়নি।

২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বাহিনীর আফগানিস্তান ত্যাগের পর তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পর থেকেই সীমান্ত অঞ্চলে সহিংসতা বেড়েছে। ইসলামাবাদ দাবি করছে, পাকিস্তানে হামলা চালানো জঙ্গিরা আফগান মাটিতে আশ্রয় নিচ্ছে এবং সেখান থেকেই পরিকল্পনা করছে হামলা।

পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, গত দুই দিনে নিরাপত্তা বাহিনী পৃথক অভিযানে অন্তত ৮৮ জন পাকিস্তানি তালেবান সদস্যকে হত্যা করেছে। ধারাবাহিক সন্ত্রাসী হামলার পর প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বলেছেন, ‘আফগানিস্তানের প্রতি ধৈর্য হারিয়ে ফেলেছে পাকিস্তান—এ কারণেই আমরা প্রতিশোধ নিয়েছি।’  তিনি একই সঙ্গে সংঘাত নিরসনে আলোচনায় বসারও আহ্বান জানিয়েছেন।

অন্যদিকে কাবুল ইসলামাবাদের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে জানিয়েছে, পাকিস্তান ভুল তথ্য ছড়িয়ে সীমান্ত উত্তেজনা বাড়াচ্ছে এবং আফগানিস্তানের স্থিতিশীলতা নষ্টের চেষ্টায় লিপ্ত।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চলতি মাসের এই সংঘর্ষ দুই দেশের মধ্যে সাম্প্রতিক দশকের সবচেয়ে ভয়াবহ, যা ইতোমধ্যেই সৌদি আরব ও কাতারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তারা শান্তি ফিরিয়ে আনতে মধ্যস্থতার চেষ্টা করছে। 
 

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন