বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

| ৬ কার্তিক ১৪৩২

ভারতের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের তালিকা ‘অধিকাংশই কাল্পনিক’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮:৪৫, ২১ অক্টোবর ২০২৫

ভারতের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের তালিকা ‘অধিকাংশই কাল্পনিক’

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বেশ কিছু চুক্তি বাতিলের খবরকে ‘ভুল তথ্য’ আখ্যা দিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “ভারতের সঙ্গে যেসব চুক্তি বাতিলের কথা বলা হচ্ছে, তার অনেকগুলোরই বাস্তব কোনো অস্তিত্ব নেই।”

তিনি জানান, ফেসবুকে একজন উপদেষ্টার অ্যাকাউন্ট থেকে প্রকাশিত ‘ভারতের সঙ্গে ১০টি চুক্তি বাতিল’ শিরোনামের তালিকা “সঠিক নয়”— ওই তালিকার অধিকাংশ চুক্তি বাস্তবে নেই, কয়েকটি কেবল পুরোনো বা ভিন্ন নামে পর্যালোচনার পর্যায়ে আছে।

তৌহিদ হোসেন বলেন,“ত্রিপুরা-চট্টগ্রাম রেল সংযোগ প্রকল্প নামে কিছু নেই, অভয়পুর-আখাউড়া রেলপথ সম্প্রসারণ নামেও কিছু নেই। আশুগঞ্জ-আগরতলা করিডর নামে প্রকল্প নেই, বরং আশুগঞ্জ নদীবন্দর-সরাইল-ধরখার-আখাউড়া স্থলবন্দর মহাসড়ক চার লেন প্রকল্পের একটি প্যাকেজ বাতিল হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন,“‘ফেনী নদী পানি ব্যবস্থাপনা’ কিংবা ‘কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টন প্রকল্প’ নামে কোনো প্রকল্প নেই। এগুলো কেবল সমঝোতা স্মারক (MoU) হিসেবে বিদ্যমান এবং বাতিল বা স্থগিত হয়নি।”

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও স্পষ্ট করেন যে, বন্দরের ব্যবহার ও সড়ক–নৌপথ উন্নয়ন, মোংলা বন্দর চুক্তি, ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল, এমনকি গঙ্গা পানি বণ্টন চুক্তি— কোনোটিই বাতিল হয়নি।

গঙ্গা চুক্তির মেয়াদ আগামী বছর শেষ হবে, এবং নবায়নের বিষয়ে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে।
তিস্তা চুক্তি নিয়ে আলোচনা স্থবির থাকলেও বন্ধ নয়, বলে জানান তিনি।

তৌহিদ হোসেন বলেন,“এখন পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকার ভারতের সঙ্গে শুধু একটি চুক্তিই বাতিল করেছে— সেটি হলো ভারতীয় প্রতিরক্ষা কোম্পানি জিআরএসই-এর সঙ্গে টাগবোট সরবরাহ চুক্তি। এটি বাংলাদেশের জন্য তেমন লাভজনক ছিল না।”

তিনি আরও আশ্বস্ত করেন, ভবিষ্যতে যখনই কোনো চুক্তি স্বাক্ষর বা বাতিল হবে, সরকার তা আনুষ্ঠানিকভাবে জনগণকে জানাবে।

উল্লেখ্য, অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুইয়ার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি ফটোকার্ডে দাবি করা হয়, “ভারতের সঙ্গে ১০টি চুক্তি বাতিল, বাকিগুলোও বিবেচনাধীন।”

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্যে সেই দাবিকে কার্যত অবিশ্বাস্য ও ভিত্তিহীন বলা হলো।

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন