বকেয়া বেতন ও ৩০ দিনের বেতন পরিশোধের দাবি রেলওয়ে শ্রমিকদের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫:১৩, ২১ অক্টোবর ২০২৫

রেল ভবনের সামনে টিএলআর শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচি। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ রেলওয়ের অস্থায়ী (টিএলআর) শ্রমিকরা তিন মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ এবং নীতিমালা অনুযায়ী মাসের ৩০ দিন হিসেবে বেতন প্রদানের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর রেল ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।
অবস্থান কর্মসূচিতে শ্রমিকরা বলেন, “আমরা তিন মাস ধরে বেতন পাচ্ছি না। অথচ প্রতিদিন ১৬ থেকে ১৭ ঘণ্টা পরিশ্রম করে রেলের চাকা সচল রাখছি। এখন বলা হচ্ছে, আমাদের ২২ দিনের বেতন দেওয়া হবে—এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা মাসের ৩০ দিন দায়িত্ব পালন করি, তাই ৩০ দিনের বেতন চাই।”
শ্রমিকরা আরও জানান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দৈনিকভিত্তিক ২২ দিনের বেতন দেওয়ার নির্দেশনা এসেছে, কিন্তু তারা মাঠপর্যায়ে কোনো ছুটি ছাড়াই পুরো মাস কাজ করে যাচ্ছেন। তাই ন্যায্য প্রাপ্য আদায়ের জন্য তারা বকেয়া বেতনসহ পূর্ণ ৩০ দিনের বেতন পরিশোধের দাবি জানান।
বাংলাদেশ রেলওয়ে টিএলআর ঐক্য ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. ফেরদৌস হাওলাদার বলেন, “আমরা অনেক স্মারকলিপি দিয়েছি, কিন্তু প্রতিবারই কেবল আশ্বাস পেয়েছি। এখন আর কোনো আশ্বাস নয়—বেতন না পাওয়া পর্যন্ত আমরা অবস্থান ছাড়ব না।”
তিনি আরও জানান, “রাষ্ট্রের অন্য কর্মচারীরা যেমন ৩০ দিনের বেতন পান, আমরা কেন বৈষম্যের শিকার হব? সরকার যদি রেল সচল রাখতে আমাদের দিয়ে কাজ করায়, তবে আমাদের প্রাপ্যও দিতে হবে।”
ফেরদৌস হাওলাদার জানান, রেলের মহাপরিচালকের দপ্তরের প্রতিনিধি তাদের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং বিকেল ৩টায় আলোচনায় বসার আশ্বাস দিয়েছেন। আলোচনার পর পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান শ্রমিকরা।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ রেলওয়ের আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় সেবা গ্রহণ নীতিমালা-২০১৮ অনুযায়ী, বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে মোট এক হাজার ৫৫১ জন অস্থায়ী শ্রমিক নিয়োগের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল, যার মেয়াদ ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। পরে আরও ৩ হাজার ৮০০ জন শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়। এছাড়া “লেভেল ক্রসিং গেট পুনর্বাসন ও মান উন্নয়ন (চতুর্থ সংশোধিত)” প্রকল্পের আওতায় এক হাজার ৫০৫ জন গেটকিপার নিয়োগ পান, যাদের মেয়াদও শেষ হতে চলেছে আগামী জুনে।
তবে রেলওয়ে নিয়োগ কার্যক্রম দীর্ঘদিন স্থগিত ছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কোটা সংস্কারজনিত জটিলতায়। সম্প্রতি পোষ্য কোটার বিষয়ে মতামত পাওয়ার পর নিয়োগ প্রক্রিয়া পুনরায় শুরু হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।