৬৪ জেলায় ৬৪ নদী পুনরুদ্ধার: অগ্রাধিকার পাচ্ছে সবচেয়ে দূষিত ১৩ নদী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪:৩৮, ২৪ আগস্ট ২০২৫

দেশের ৬৪ জেলার অন্তত ৬৪টি নদী পরিষ্কার ও পুনরুদ্ধারের লক্ষ্য নিয়ে বড় কর্মপরিকল্পনা নিয়েছে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। এরই অংশ হিসেবে সবচেয়ে বিপন্ন ১৩টি নদীকে অগ্রাধিকার দিয়ে প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। এ উদ্দেশ্যে প্রাথমিকভাবে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে।
কোন ১৩ নদী অগ্রাধিকার পাচ্ছে?
১. গাজীপুরের লবণদহ
২. নরসিংদীর হাঁড়িধোয়া
৩. রংপুরের শ্যামাসুন্দরী
৪. মুন্সিগঞ্জের লৌহজং
৫. চট্টগ্রামের হালদা
৬. কক্সবাজারের বাঁকখালী
৭. হবিগঞ্জের সুতাং
৮. খুলনার সালতা
৯. রংপুরের আলাইকুড়ি
১০. কিশোরগঞ্জের মগড়া
১১. রাজশাহীর বড়াল
১২. বগুড়ার করতোয়া
১৩. নাটোরের বারনই
প্রতিটি নদীর জন্য আলাদা প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে।কোনো নদীর জন্য সর্বোচ্চ বাজেট ৫০ কোটি টাকার বেশি হবে না।সর্বমোট বাজেট ৫০০–৬০০ কোটি টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।
কাজের ধরন:দখল উচ্ছেদ, দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও উৎস বন্ধ, ভরাট অংশ খনন।
গবেষণার তথ্য: কেন ১৩ নদী?
রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার (আরডিআরসি) ২০২২ সালে গবেষণা চালিয়ে ২০২৪ সালে ফল প্রকাশ করে। তাতে দেখা যায়, লবণদহ, হাঁড়িধোয়া ও সুতাং দেশের সবচেয়ে দূষিত নদী।
মূল চার প্যারামিটার বিশ্লেষণ করা হয়:
পানির জারক প্রকৃতি
দ্রবীভূত অক্সিজেন (DO)
জৈব অক্সিজেন চাহিদা (BOD)
রাসায়নিক অক্সিজেন চাহিদা (COD)
ভয়াবহ অবস্থা
পিএইচ মান (ক্ষারতা) :
লবণদহ: ৫
হাঁড়িধোয়া: ৪.১
সুতাং: ৪
(বিশুদ্ধ পানির মান ৬–৭ হওয়া উচিত)
দ্রবীভূত অক্সিজেন (DO):
লবণদহ: ০.২১
হাঁড়িধোয়া: ০.৬
সুতাং: ০.৪
(মানবস্বাস্থ্য ও জলজ প্রাণীর জন্য প্রয়োজন ৪.৫–৮)
অর্থাৎ, জলজ প্রাণীর বেঁচে থাকা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশে শিল্পায়ন, অনিয়ন্ত্রিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও নদীদখলের কারণে নদীগুলো মারাত্মক সংকটে পড়েছে। সরকারের ৬৪ জেলায় ৬৪ নদী পরিষ্কার কর্মসূচি যদি সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয়, তবে এটি দেশের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এক বড় মাইলফলক হয়ে দাঁড়াতে পারে।