রোহিঙ্গাদের মাঝে বৈধ সিম বিতরণ শুরু, প্রথম ধাপে ১০ হাজার
উখিয়া-টেকনাফ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪:৫৩, ১১ নভেম্বর ২০২৫
প্রথম ধাপে ১০ হাজার রোহিঙ্গা নিবন্ধিত ও অনুমোদিত সিম কার্ড পাচ্ছেন। ছবি: সমাজকাল
কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে বৈধ সিম কার্ড বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সোমবার (১০ নভেম্বর) শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন হয়। প্রথম ধাপে ১০ হাজার রোহিঙ্গা নিবন্ধিত ও অনুমোদিত সিম কার্ড পাচ্ছেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রথম দিনে ইউনাইটেড কাউন্সিল অব রোহাং (ইউসিআর)–এর নির্বাচিত সভাপতি ও নির্বাহী কমিটির সদস্যদের হাতে প্রতীকীভাবে সিম কার্ড তুলে দেওয়া হয়।
আরআরআরসি মিজানুর রহমান বলেন,“রোহিঙ্গাদের ব্যবহৃত সব অবৈধ সিম দ্রুত ব্লক করে দেওয়া হবে। কেবল বৈধ সিম ব্যবহারের সুযোগ থাকবে। এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত হবে এবং অবৈধ সিম ব্যবহার করে সংঘটিত অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।”
তিনি আরও জানান, দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের বিভিন্ন মোবাইল অপারেটরের অবৈধ সিম ব্যবহার করে আসছিলেন, যা নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার চলতি বছরের আগস্টে রোহিঙ্গাদের বৈধভাবে সিম ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
পরে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ও দেশের চারটি মোবাইল অপারেটরের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনার পর এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন শুরু হয়।
সিম বিক্রির প্রচলিত নীতিমালা অনুযায়ী জাতীয় পরিচয়পত্র ও বায়োমেট্রিক তথ্য প্রয়োজন হয়। কিন্তু রোহিঙ্গাদের কাছে জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশন (ইউএনএইচসিআর) প্রদত্ত নিবন্ধন নম্বর বা ‘প্রোগ্রেস আইডি’ ব্যবহার করা হচ্ছে।
১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী রোহিঙ্গারা এই আইডির মাধ্যমে সিম কার্ড পাবেন। এজন্য মোবাইল অপারেটররা পৃথক নম্বর সিরিজ নির্ধারণ করেছে।
ইউএনএইচসিআরের রোহিঙ্গা ডেটাবেজ সংরক্ষিত থাকবে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) ডেটা সেন্টারে। পরবর্তীতে এই তথ্য সরকারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ে হস্তান্তর করা হবে।
পাইলট প্রকল্প হিসেবে শুরু হওয়া এই উদ্যোগে প্রথম ধাপে ১০ হাজার রোহিঙ্গাকে বৈধ সিম প্রদান করা হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে আরও সম্প্রসারিত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ উদ্যোগের মাধ্যমে রোহিঙ্গা শিবিরে যোগাযোগ ব্যবস্থার স্বচ্ছতা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা এবং ডিজিটাল নজরদারি আরও জোরদার করা সম্ভব হবে।
