বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫

| ১২ ভাদ্র ১৪৩২

যাদের আজ স্মরণ করি

সমাজকাল ডেস্ক

প্রকাশ: ১৩:০৫, ২৫ আগস্ট ২০২৫

যাদের আজ স্মরণ করি

আজকের দিনে ইতিহাসে আমরা স্মরণ করি তাদের, যারা জ্ঞান, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান, রাজনীতি ও সমাজসেবায় নিজেদের অমর করে রেখেছেন। তাদের প্রয়াণের মধ্য দিয়ে এক একটি যুগের অবসান ঘটেছে, কিন্তু অবদান আজও আমাদের আলো দিয়ে যায়।

রাজনীতি ও নেতৃত্বে
আহমদ আল-মনসুর (১৬০৩) – মরক্কোর সাদী বংশের খ্যাতিমান সুলতান। তিনি কূটনীতি ও সামরিক কৌশলে ছিলেন অত্যন্ত দক্ষ। তাঁর শাসনামলে মারাকেশ হয়ে উঠেছিল আফ্রিকা ও ইউরোপের সংযোগকেন্দ্র।
হেনরি মর্গান (১৬৮৮) – ওয়েলশ নৌসেনা ও রাজনীতিবিদ, যিনি জ্যামাইকার লেফটেন্যান্ট গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর নাম সমুদ্রগামী অভিযাত্রীদের মধ্যে কিংবদন্তি হয়ে আছে।

দর্শন, সাহিত্য ও ইতিহাসে
ডেভিড হিউম (১৭৭৬) – প্রখ্যাত স্কটিশ দার্শনিক ও ইতিহাসবিদ। অভিজ্ঞতাবাদ ও সংশয়বাদের মাধ্যমে আধুনিক চিন্তার ভুবনে তিনি রেখেছেন অমোচনীয় ছাপ।

ফ্রিডরিখ ভিলহেল্ম নিচে (১৯০০) – জার্মান দার্শনিক, যাঁর চিন্তায় ‘ঈশ্বর মৃত’ তত্ত্ব থেকে শুরু করে আধুনিক অস্তিত্ববাদী ভাবনার ভিত্তি গড়ে ওঠে।

আইভিন্ড জনসন (১৯৭৬) – সুইডিশ ঔপন্যাসিক ও ছোটগল্পকার, সাহিত্যে নোবেলজয়ী। আধুনিক ইউরোপীয় সমাজ-সংকট তাঁর লেখায় প্রবলভাবে প্রতিফলিত।

তারাপদ রায় (২০০৭) – বাংলা সাহিত্যের অন্যতম হাস্যরসাত্মক কবি ও প্রাবন্ধিক। তাঁর লেখনীতে কৌতুক, ব্যঙ্গ ও রসিকতার ছোঁয়ায় পাঠককে হাসি ও চিন্তার খোরাক যুগিয়েছে।

বিজ্ঞান ও আবিষ্কারে

জেমস ওয়াট (১৮১৯) – ব্রিটিশ প্রকৌশলী, যিনি বাষ্পীয় ইঞ্জিন উন্নত করে শিল্পবিপ্লবের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন।

উইলিয়াম হার্শেল (১৮২২) – জার্মান বংশোদ্ভুত ইংরেজ জ্যোতির্বিদ, যিনি গ্রহ ইউরেনাস আবিষ্কার করেন এবং পাশাপাশি সংগীতেও রেখেছিলেন অবদান।

মাইকেল ফ্যারাডে (১৮৬৭) – ইংরেজ বিজ্ঞানী, তড়িৎচৌম্বকত্ব ও ইলেক্ট্রোকেমিস্ট্রির পথিকৃৎ। আধুনিক প্রযুক্তির অনেক ভিত্তি তাঁর পরীক্ষণ থেকে এসেছে।

অঁতোয়ান অঁরি বেক্যরেল (১৯০৮) – ফরাসি পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি রেডিওঅ্যাকটিভিটির আবিষ্কারের জন্য নোবেল পুরস্কার পান।

সমাজসেবা ও স্বাধীনতা সংগ্রামেমহারাণী স্বর্ণময়ী (১৮৯৭) – মুর্শিদাবাদের কাশিমবাজার রাজপরিবারের মহারাণী। সমাজসেবায়, বিশেষ করে নারীশিক্ষা ও দরিদ্র সহায়তায় তাঁর অবদান অনন্য।

অনুজাচরণ সেন (১৯৩০) – অগ্নিযুগের সাহসী শহীদ বিপ্লবী। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে তিনি প্রাণ বিসর্জন দেন, স্বাধীনতার সংগ্রামে যুক্ত তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন।

শিল্প ও সংস্কৃতিতে
পল মুনি (১৯৬৭) – মার্কিন মঞ্চ ও চলচ্চিত্র অভিনেতা, যিনি হলিউডে নিজের অভিনয়শৈলীতে স্থায়ী ছাপ রেখেছিলেন।
শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় (২০২১) – প্রখ্যাত বাঙালি তবলা বাদক। ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতের জগতে তাঁর তাল ও লয়ের মুন্সিয়ানা শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছে।

মহাকাশ অভিযানে
নিল আর্মস্ট্রং (২০১২) – মানব ইতিহাসের এক গৌরবময় নাম। ১৯৬৯ সালে প্রথম মানুষ হিসেবে চাঁদে পদার্পণ করেন। তার সেই ঐতিহাসিক উক্তি—“মানুষের জন্য এক ছোট পদক্ষেপ, মানবজাতির জন্য এক বিশাল অগ্রগতি”—আজও বিশ্ববাসীর কানে অনুরণিত।
আজ আমরা তাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি, যারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে অমর কীর্তি রেখে গেছেন। তাদের মৃত্যু কেবল শারীরিক অবসান, কিন্তু কর্ম ও অবদানের আলো প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দিচ্ছে অনুপ্রেরণা।

আরও পড়ুন

শীর্ষ সংবাদ: