যুক্তরাষ্ট্র রুশ জ্বালানি কিনতে পারলে ভারত পারবে না কেন: পুতিন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪:১০, ৫ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ২১:৩২, ৫ ডিসেম্বর ২০২৫
সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের ওপর রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল না কেনার যে চাপ যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে দিয়ে যাচ্ছে, তা নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
তিনি বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্র যখন আমাদের কাছ থেকেই পারমাণবিক জ্বালানি ও অন্যান্য পণ্য কিনে, তখন ভারত কেন রুশ জ্বালানি কিনতে পারবে না?”
দুই দিনের ভারত সফরে এখন ভারতে আছেন পুতিন। সফর শুরু হওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই নয়া দিল্লিতে পুতিনের এক একান্ত সাক্ষাৎকার সম্প্রচার করে ইন্ডিয়া টুডে। সেখানেই তিনি এই প্রশ্ন তোলেন।
সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকে ‘দ্বিমুখী’ আখ্যা দিয়ে পুতিন বলেন, “এই প্রশ্নটি গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন—আমরা চাইলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গেও এ বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।”
সোভিয়েত আমল থেকেই রাশিয়া ভারতের ঘনিষ্ঠ কৌশলগত অংশীদার। অস্ত্র আমদানিতে ভারতের প্রধান উৎস রাশিয়া। ২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ভারত বিশ্বে রুশ সমুদ্রবাহী তেলের অন্যতম বড় ক্রেতায় পরিণত হয়।
তবে রুশ তেল কেনার জেরে ভারতীয় পণ্যের ওপর শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর ফলে ভারতীয় কোম্পানিগুলো রুশ তেল কেনা কমিয়ে দিয়েছে, যার প্রভাব পড়ে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে। চলতি মাসে ভারতের অপরিশোধিত তেল আমদানি তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে আছে।
ওয়াশিংটনের অভিযোগ—ভারত রুশ তেল কিনে পরোক্ষে ইউক্রেন যুদ্ধে পুতিনকে সহায়তা করছে।
এসময় পুতিন জানান, নতুন শুল্ক ও সীমাবদ্ধতার পরও দুই দেশের বাণিজ্য বন্ধ হয়নি। তিনি বলেন, “চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে সামগ্রিক বাণিজ্যে সামান্য পতন দেখা গেছে। তবে সামগ্রিকভাবে বাণিজ্য লেনদেন আগের মতোই আছে।”
তার দাবি—ভারতে রাশিয়ার তেল ও পেট্রোলিয়াম পণ্যের বাণিজ্য “স্বাভাবিকভাবেই চলমান”।
মস্কোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চলমান উচ্চমূল্যের বাণিজ্যের দিকেই ইঙ্গিত করে ভারত ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ককে ‘অন্যায্য ও অযৌক্তিক’ বলছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনও রাশিয়া থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস, সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম, বিভিন্ন কাঁচামালসহ শত শত কোটি ডলারের পণ্য আমদানি অব্যাহত রেখেছে।
ট্রাম্পের শুল্ক নীতি মোকাবেলার প্রশ্নে পুতিন বলেন—মার্কিন প্রশাসনে এমন উপদেষ্টা রয়েছেন যারা মনে করেন এই নীতিতে যুক্তরাষ্ট্রেরই লাভ হবে।
তবে পুতিনের আশা, “শেষ পর্যন্ত বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার যে নিয়মগুলো লঙ্ঘিত হচ্ছে, সেগুলো ঠিক হয়ে যাবে।”
