মিয়ানমারে আফিম উৎপাদন ১ দশকের সর্বোচ্চ; বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী অঞ্চলে ঝুঁকি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫:৫৪, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫
যুদ্ধ আর অর্থনৈতিক ভাঙনের মধ্যে আটকে থাকা মিয়ানমারে আফিম উৎপাদন এমন গতিতে বাড়ছে যে, জাতিসংঘও মাথা চুলকাচ্ছে। ইউএনওডিসি–র নতুন প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এক দশকের মধ্যে ২০২৫ সালে পপি চাষ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। আফগানিস্তানে উৎপাদন কমে যাওয়ার পর মিয়ানমার আবারও বৈশ্বিক অবৈধ আফিম অর্থনীতির কেন্দ্রে উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, মাত্র এক বছরে পপি চাষ বেড়েছে ১৭ শতাংশ।২০২৪ সালে যেখানে ৪৫ হাজার ২০০ হেক্টরে পপি চাষ হতো, ২০২৫ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৩ হাজার ১০০ হেক্টর। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ও জীবিকা সংকটে বিপর্যস্ত কৃষকরা দ্রুত আয়ের আশায় অবৈধ চাষের দিকে ঝুঁকছেন।
তালেবান আফিম-বিরোধী কঠোর নীতি নেওয়ার পর আফগানিস্তানে উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। এর ফলে বৈশ্বিক সরবরাহ শূন্যতা পূরণে মিয়ানমার আবারও শীর্ষে উঠে এসেছে।
ইউএনওডিসির দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের প্রধান ডেলফিন শান্টজ জানিয়েছেন, “মিয়ানমার এখন এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে দাঁড়িয়ে। আফিম অর্থনীতির পুনরুত্থান আরও বড় সঙ্কেত দিচ্ছে।”
প্রতিবেদনে দেখা গেছে,পূর্ব শান প্রদেশে বৃদ্ধি: ৩২%, চিন প্রদেশে বৃদ্ধি: ২৬%, দক্ষিণ শান এখনও প্রধান উৎপাদন এলাকা; একা এই অঞ্চলেই দেশের মোট উৎপাদনের ৪৪ শতাংশ।
এই তিন অঞ্চলেই সামরিক জান্তা বাহিনী ও বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর লড়াই তীব্র, আর সেই অস্থিরতার মধ্যেই পপি চাষ আরও ছড়িয়ে পড়ছে।
প্রথমবারের মতো সাগাইং অঞ্চলের উত্তরাংশে ৫৫২ হেক্টর পপি চাষ শনাক্ত হয়েছে। এর মানে, চাষ এখন ভৌগোলিকভাবে পশ্চিম দিকে, অর্থাৎ ভারতের সীমান্ত বরাবরও ছড়িয়ে যাচ্ছে।
ইউএনওডিসি বলছে, বিশেষ করে চিন রাজ্যে চাষ বৃদ্ধির কারণে মিয়ানমারের পশ্চিম সীমান্ত ও প্রতিবেশী দেশগুলো—যেমন ভারত, বাংলাদেশ—নতুন ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।
২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর দেশজুড়ে গৃহযুদ্ধ, অর্থনৈতিক বিপর্যয় আর রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা চরমে। এমন পরিস্থিতিতে ২৮ ডিসেম্বর থেকে বিতর্কিত সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে জান্তা সরকার। স্বাভাবিকভাবেই অর্থনীতি ভেঙে পড়ার সুযোগে অপরাধ চক্রগুলো আরও শক্তিশালী হচ্ছে।
