নলিউড অভিনেতা ওডিরা এনওবু আর নেই

নাইজেরিয়ার জনপ্রিয় নলিউড অভিনেতা, কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও ইনফ্লুয়েন্সার ওডিরা এনওবু দক্ষিণ আফ্রিকায় আকস্মিকভাবে মারা গেছেন। বয়স হয়েছিল মাত্র ৪৩ বছর। 

অ্যাক্টরস গিল্ড অব নাইজেরিয়া এবং দায়িত্বে থাকা আইনজীবী চুকউজিয়েকউ চুকউদি জানান, একটি নাইজেরিয়ান মালিকানাধীন রিয়েল এস্টেট কোম্পানির প্রচারণায় অংশ নিতে কিছু সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার বিনোনি শহরে অবস্থান করছিলেন এনওবু। 

সোমবার (২৪ নভেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুরে তাকে হোটেলকক্ষে ‘শ্বাসকষ্টে ছটফট করতে’ দেখা যায়। হোটেল কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে অ্যাম্বুলেন্স ডাকে। প্যারামেডিকরা ডিফিব্রিলেটর ব্যবহার করে তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলেও হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি; শিগগিরই ময়নাতদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ হবে বলে জানানো হয়েছে।

এনওবুর মৃত্যুতে নাইজেরিয়া জুড়ে নেমে এসেছে গভীর শোক। ভক্ত, সহশিল্পী ও নির্মাতাদের অনেকে সামাজিক মাধ্যমে তাকে স্মরণ করছেন। ক্যারিয়ারে ৬০টিরও বেশি ছবিতে অভিনয় করা এই অভিনেতা তার কমেডি চরিত্র, শিশুর মতো মুখাবয়ব এবং আন্তরিক ব্যক্তিত্বের কারণে বিশেষ জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন।

চুকউদি আরও জানান, ‘আমাদের ফোনে খবরটি ছড়িয়ে পড়ার আগেই নাইজেরিয়ার লোকজন মৃত্যুর সত্যতা জানতে চাইছিলেন। আসলে পরিবারের কাছে বিষয়টি কীভাবে জানাব, সেটি নিয়ে আমরা তখন ভাবছিলাম’।

এনওবুর মৃত্যুর পরপরই তার নিথর দেহের ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে। এতে সাধারণ মানুষ ও সহশিল্পীরা ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করেন। পরিবারের সদস্যরা এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেননি।

১৯৮২ সালে নাইজেরিয়ার এনুগু অঙ্গরাজ্যে জন্ম নেওয়া ওডিরা এনওবু মাধ্যমিক শেষ করেই প্রথম চলচ্চিত্র ‘জোসেফ দ্য ড্রিমার’-এ অভিনয়ের সুযোগ পান। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে প্রচুর সিনেমায় অভিনয় করলেও নিজেকে বারবার টাইপকাস্ট করা হচ্ছে- এমন অভিযোগ তিনি ২০২১ সালে বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে করেছিলেন। তাই তিনি স্বাধীন সৃজনশীলতার খোঁজে কনটেন্ট ক্রিয়েশনের দিকে ঝুঁকেছিলেন।

গত বছরের জুলাইয়ে তিনি একটি ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা থেকে প্রাণে বেঁচে যান। তখনই একদফা তার মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল।

স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, এনওবু অবিবাহিত ছিলেন। মৃত্যুর পর তার স্ত্রী বা সন্তান সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

সহকর্মীদের ভাষ্যে, ওডিরা এনওবু ছিলেন পরিশ্রমী, প্রাণবন্ত ও হাস্যোজ্জ্বল শিল্পী। তার মৃত্যুকে নলিউড চলচ্চিত্রশিল্পের বড় ক্ষতি হিসেবে দেখছেন অনেকে।