মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের শোষণ: জাতিসংঘের সতর্কবার্তা
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪:০৪, ২৭ নভেম্বর ২০২৫
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের লোগো। ছবি: সংস্থার ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের ওপর পদ্ধতিগত শোষণ, প্রতারণা ও ঋণের ফাঁদ সম্পর্কে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) উল্লেখ করেছে, মালয়েশিয়ায় যাওয়া অনেক শ্রমিক পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত, ভুয়া চাকরির প্রতিশ্রুতি, চুক্তির শর্ত ও প্রকৃত কাজের মধ্যে বৈষম্য ভোগ করছেন।
বর্তমানে মালয়েশিয়ায় ৮ লাখের বেশি বাংলাদেশির ওয়ার্ক পারমিট রয়েছে। অনেক শ্রমিক সরকারি নির্ধারিত হারের চেয়ে ৫ গুণ বেশি ফি পরিশোধের পরও কাজে যেতে পারছেন না বা চরম শোষণের শিকার হচ্ছেন। নথিপত্র না থাকা শ্রমিকরা গ্রেপ্তার, আটক ও বিতাড়নের ঝুঁকিতে থাকেন। মালয়েশিয়ার কঠোর অভিবাসী আইন অনুপ্রবেশকে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করে, ফলে দেশে নিয়মিত ধাওয়া-পাল্টা অভিযান চলছে। বর্তমানে প্রায় ১৮ হাজার অভিবাসী শ্রমিক ও শরণার্থী আটক কেন্দ্রগুলোতে রয়েছেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যেই জবরদস্তিমূলক শ্রমে উৎপাদিত পণ্যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ২০২৭ সাল থেকে ‘ফোর্সড লেবার রেগুলেশন’ কার্যকর হবে, যা শ্রমিকদের শোষণে জড়িত পণ্যের বাণিজ্যে বাধা সৃষ্টি করবে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদের আহ্বান জানিয়েছে, বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়াকে শ্রমিকদের অভিযোগ দ্রুত তদন্ত করে কার্যকর প্রতিকার নিশ্চিত করতে হবে। জোরপূর্বক প্রত্যাবাসন বা প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থার মাধ্যমে শ্রমিকদের শাস্তি দেওয়া আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘন।
সংস্থাটি আন্তর্জাতিক ক্রেতাদেরও সতর্ক করেছে, তারা যেন ‘ফেয়ার লেবার অ্যাসোসিয়েশন’-এর নির্দেশিকা অনুসরণ করে দায়িত্বশীল নিয়োগ ব্যয় অন্তর্ভুক্ত করে এবং শ্রমিকদের জন্য আইনি সহায়তা নিশ্চিত করে।
এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেসব দেশের অর্থনীতি অভিবাসী শ্রমিকের শ্রমের ওপর নির্ভরশীল, তাদের আচরণ পরিবর্তন না করলে নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকি ও শ্রমিকের দুর্ভোগ আরও দীর্ঘায়িত হবে।
