যেভাবে মিলবে সেন্টমার্টিন যাওয়ার ট্রাভেল পাস
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৭:২৩, ২ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১৮:১৫, ২ ডিসেম্বর ২০২৫
সেন্টমার্টিন ভ্রমণে সরকারি ট্রাভেল। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটন গন্তব্য সেন্টমার্টিনে এবার কঠোর নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই শুরু হয়েছে পর্যটন মৌসুম। দ্বীপটির নাজুক পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় সরকার নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, যার ফলে পুরো বছর নয়—মাত্র দুই মাস পর্যটকরা দ্বীপে রাত্রীযাপনের সুযোগ পাবেন।
১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া মৌসুম চলবে আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, দিনে সর্বোচ্চ ২ হাজার পর্যটক দ্বীপে যেতে পারবেন। জাহাজ ছাড়ছে কক্সবাজার বিমানবন্দরের পাশের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে। টেকনাফ থেকে কোনো জাহাজ পর্যটক পরিবহন করছে না।
সেন্টমার্টিনে যেতে সরকারি ট্রাভেল পাস সংগ্রহ করতে হবে। কিউআর কোডসংবলিত ট্রাভেল পাস ছাড়া টিকিট বাতিল বলে গণ্য হবে। এছাড়া মানতে হবে আরও বেশ কিছু সরকারি নির্দেশনা।
পর্যটকদের প্রশ্ন—কোথায় এই ট্রাভেল পাস ও টিকিট পাওয়া যাবে? ভ্রমণের ক্ষেত্রেই বা কোন কোন নিয়ম মানতে হবে।
এ বিষয়ে কর্ণফুলী ক্রুজ লাইনের টিকেটিং কর্মকর্তা সাইফুল আলম জানান, অনুমোদিত জাহাজের টিকিটের সঙ্গেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে কিউআর কোডযুক্ত ট্রাভেল পাস জেনারেট হয়ে যায়। পর্যটকদের আলাদা করে কোনো পাস সংগ্রহ করতে হবে না। অনুমোদিত জাহাজ কর্তৃপক্ষ বা ট্রাভেল এজেন্টের কাছ থেকে টিকিট কিনলেই হবে। তবে যাত্রার আগে অবশ্যই কিউআর কোডসহ প্রিন্ট করা টিকিট সংগ্রহ করতে হবে।
সি ক্রুজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর জানান, চলতি মৌসুমে পর্যটক পরিবহনের জন্য ছয়টি জাহাজ অনুমোদন পেয়েছে। এগুলো হলো—এমভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস, এমভি বার আউলিয়া, এমভি বে ক্রুজ, এমভি কাজল, কেয়ারি সিন্দাবাদ এবং কেয়ারি ক্রুজ অ্যান্ড ডাইন।
জাহাজ চলাচলের সময়সূচি সম্পর্কে জানানো হয়, কক্সবাজার বিমানবন্দরের পাশের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে প্রতিদিন সকাল ৭টায় জাহাজ ছাড়বে। পরদিন বিকেল ৩টায় সেন্টমার্টিন থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা হবে। ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত এই সূচিতে জাহাজ চলাচল করবে।
সেন্টমার্টিনে ভ্রমণের সময় পর্যটকদেরকে ১২ দফা নির্দেশনা মানতে হবে। দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পরিবেশ মন্ত্রণালয় এসব নির্দেশনা দিয়েছে। এতে বলা হয়, দীর্ঘ নয় মাস বন্ধ থাকার পর ১ নভেম্বর থেকে তিন মাসের জন্য দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য খোলা থাকবে।
তবে নভেম্বরে রাতে থাকার অনুমতি ছিল না বলে পর্যটকরা যাননি। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাত্রীযাপনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সৈকতে রাতে আলো জ্বালানো, উচ্চ শব্দ করা, বারবিকিউ পার্টি করা, কেয়া বনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা কেনাবেচা এবং সামুদ্রিক কচ্ছপ, পাখি, প্রবাল, কাঁকড়া, ঝিনুক-শামুকসহ কোনো প্রাণীর ক্ষতি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সৈকতে মোটরসাইকেল, সি-বাইকসহ সব ধরনের যান্ত্রিক যান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এছাড়া পর্যটকরা পলিথিন বহন করতে পারবেন না। একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক—যেমন চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক চামচ, স্ট্র, সাবান বা শ্যাম্পুর মিনি প্যাক এবং ৫০০ মিলি বা ১ লিটারের প্লাস্টিকের বোতল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পর্যটকদের নিজস্ব পানির ফ্লাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
