গম্ভীরকে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান, সমর্থকদের ক্ষোভে উত্তপ্ত গুয়াহাটি

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টানা হোয়াইটওয়াশের ক্ষোভ এবার গিয়ে পড়ল ভারতের হেড কোচ গৌতম গম্ভীরের ওপর। গুয়াহাটি টেস্টে ৪০৮ রানে লজ্জাজনক হারের পর পুরস্কার বিতরণীর সময় স্টেডিয়ামের গ্যালারি থেকে ওঠে ‘গম্ভীর গো ব্যাক’ ও ‘গম্ভীর হায় হায়’ স্লোগান। আচমকা এই পরিস্থিতিতে বিব্রত হয়ে পড়েন ভারতীয় ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফরা।
বর্ষাপাড়া স্টেডিয়ামে ম্যাচ শেষে মাঠে দাঁড়িয়ে ছিলেন খেলোয়াড়রা। ঠিক সেই সময় দর্শকাসনের একাংশ থেকে গম্ভীরকে লক্ষ্য করে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করা শুরু হয়। স্লোগানের আওয়াজ এতটাই তীব্র ছিল যে খুব কাছেই দাঁড়িয়ে থাকা ভারতীয় কোচের কানেও তা স্পষ্টভাবে পৌঁছে যায়। মাঠে থাকা বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারও বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে ছিলেন গ্যালারির দিকে।

সমর্থকদের আচরণ দেখে দলের পেসার মোহাম্মদ সিরাজ ঠোঁটে আঙুল চেপে বারবার চুপ থাকতে ইঙ্গিত করেন। হাত নেড়ে আরও কয়েকবার দর্শকদের শান্ত হওয়ার অনুরোধ জানান।
বাউন্ডারির ধারে অবস্থান করা ব্যাটিং কোচ সীতাংশু কোটাকও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন,“যে লোকটা ভারতের হয়ে এত লড়াই করে, তাকেই তোমরা হায় হায় বলছ?”
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে বিসিসিআই কর্তৃপক্ষ ম্যাচ কর্মকর্তাদের কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেয়। পুলিশ দ্রুত স্ট্যান্ডে গিয়ে স্লোগান দেওয়া দর্শকদের শনাক্ত করে। তাদের মধ্যে একজনকে আটকও করা হয় বলে স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।
কলকাতার ঘূর্ণি পিচ বিতর্কের পরও পরিস্থিতি বদলায়নি। ম্যাচ পাঁচ দিনে গেলেও ফল একই—পরাজয়, তা-ও বিশাল ব্যবধানে।
নিউজিল্যান্ডের পর এবার দক্ষিণ আফ্রিকার কাছেও ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশ হওয়া ভারতের সমর্থকেরা মেনে নিতে পারছেন না।

ঘটনার পর সাংবাদিক সম্মেলনে গম্ভীর বলেন, “আমার ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার বিসিসিআইয়ের। আমি বরাবর দলের কথা ভেবেছি, নিজের কথা নয়।”
বোর্ডকর্তারা অবশ্য এখনই গম্ভীরকে সরানোর কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন। এক বোর্ড কর্মকর্তা ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন,“এখনই গম্ভীরকে সরানোর কথা ভাবছি না। তিনি নতুন দল তৈরি করছেন। ২০২৭ সালের বিশ্বকাপ পর্যন্ত তার চুক্তি রয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের পর গম্ভীর ও নির্বাচকদের সঙ্গে বিসিসিআইয়ের বৈঠক হবে।”
ভারতীয় দলের সাম্প্রতিক ব্যর্থতা, বিশেষ করে ব্যাটিং ব্যর্থতা এবং টেস্টে ধারাবাহিকতা হারানোর কারণে দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে চরম হতাশা তৈরি হয়েছে। তারই বহিঃপ্রকাশ যেন এই ‘গো ব্যাক’ স্লোগান।