ছবিতে গাজার গণবিবাহ
মাইসারা জান্নাত
প্রকাশ: ১৩:০১, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১৭:০০, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫
গাজার গণবিবাহে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন এক যুগল। ছবি: এপি
ধ্বংসস্তূপের মাঝেও জীবনের জয়গান। গাজার খান ইউনিসে ধ্বংসাবশেষের বুকে দাঁড়িয়ে ৫৪ যুগল শুরু করলেন নতুন জীবনের পথচলা। ইসরায়েলি আগ্রাসনে বিধ্বস্ত গাজার জনপদ, তবুও থামেনি তাদের স্বপ্নবুনন। তারা দুর্বার জাতি! কে থামায় তাদের?

ছবি: টিআরটি ওয়ার্ল্ড
দক্ষিণ গাজার হামাদ সিটিতে আয়োজিত এই গণবিবাহে অংশ নেন ফিলিস্তিনি দম্পতিরা। ইমান হাসান লাওয়া নিজেকে সাজিয়েছিলেন ফিলিস্তিনি ঐতিহ্যের মোড়কে, আর হিকমত লাওয়া পরেছিলেন স্যুট। দক্ষিণ গাজার বিধ্বস্ত দালানকোঠার পাশ দিয়ে হাতে হাত রেখে হাঁটছিলেন তারা। তাদের মতোই একই সাজে সজ্জিত ছিলেন অন্য নবদম্পতিরাও।

ছবি: টিআরটি ওয়ার্ল্ড
মঙ্গলবার অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় ৫৪ যুগল বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। দুই বছরের নির্মম গণহত্যা ও বিভীষিকার পর এই আয়োজন যেন এক আশার আলো। লাওয়া বলেন, যা কিছুই ঘটুক না কেন, আমরা নতুন জীবন শুরু করব। মহান আল্লাহর ইচ্ছায় এটাই হবে যুদ্ধের সমাপ্তি।

ছবি: টিআরটি ওয়ার্ল্ড
ফিলিস্তিনি সংস্কৃতিতে বিবাহের জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞের কারণে গাজায় এমন দৃশ্য বিরল হয়ে পড়েছিল। যুদ্ধবিরতির সুযোগে সেই ঐতিহ্য আবার ফিরতে শুরু করেছে। যদিও জাঁকজমকপূর্ণ সেই দিন আর নেই, তবুও জীবনের তাগিদে এই আয়োজন।

ছবি: টিআরটি ওয়ার্ল্ড
দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহরে জনতার ঢল এবং ফিলিস্তিনি পতাকা উড়ালেও উৎসবের আমেজ কিছুটা ম্লান ছিল, গাজা জুড়ে চলা সংকটের কারণে।

ছবি: টিআরটি ওয়ার্ল্ড
ইমান ও হিকমতের মতো গাজার প্রায় ২০ লাখ বাসিন্দা ইসরায়েলি ধ্বংসযজ্ঞে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। শহরের পর শহর মাটির সাথে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই সাথে গণহত্যার মধ্যে ত্রাণ সংকট ও নিত্যদিনের দুর্ভোগ তো লেগেই আছে।

ছবি: টিআরটি ওয়ার্ল্ড
হিকমত বলেন, আমরাও বিশ্বের অন্যান্য মানুষের মতো সুখী হতে চাই। আমার স্বপ্ন ছিল একটি ঘর হবে, একটি চাকরি থাকবে এবং সবার মতো স্বাভাবিক জীবনযাপন করব। কিন্তু আজ আমার স্বপ্ন হলো মাথা গোঁজার জন্য কেবল একটি তাঁবু খুঁজে পাওয়া।

ছবি: টিআরটি ওয়ার্ল্ড
তিনি আরও যোগ করেন, জীবন হয়তো স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে, কিন্তু তা আমাদের প্রত্যাশার মতো নয়।

ছবি: টিআরটি ওয়ার্ল্ড
এই গণবিবাহের আয়োজনে অর্থায়ন করেছে আল ফারেস আল শাহিম নামের একটি সংস্থা। অনুষ্ঠান আয়োজনের পাশাপাশি সংস্থাটি দম্পতিদের নতুন জীবন শুরুর জন্য সামান্য অর্থ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী উপহার দিয়েছে।

ছবি: টিআরটি ওয়ার্ল্ড
ফিলিস্তিনিদের কাছে বিয়ে মানেই দিনভর উৎসব। বর্ণিল পোশাক পরে বিশাল পরিবার নিয়ে রাস্তায় আনন্দ মিছিল আর ভুরিভোজ এই ঐতিহ্যের অংশ।
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য হতেই তোমাদের সঙ্গিনীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের নিকট শান্তি পাও। (সুরা রুম, আয়াত ২১) ধ্বংসের মাঝেও এই দম্পতিদের নতুন পথচলা যেন সেই শান্তির অন্বেষণ।
