পরের জমি জবর দখলের শাস্তি
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১২:২৫, ৫ ডিসেম্বর ২০২৫
ছবি: সংগৃহীত
ইসলাম ধর্মে সম্পত্তির অধিকার এবং এর সুরক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারো সম্পদ বা ভূমি অন্যায়ভাবে জবরদখল করা ভয়াবহ অপরাধ। মানুষের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তার প্রশ্নটি ইসলামে সর্বোচ্চ গুরুত্ব বহন করে। এই কারণে অবৈধভাবে জমি দখল করার পরিণতি যে কত মারাত্মক হতে পারে, তা স্পষ্ট করার জন্য মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) কেয়ামতের দিনের কঠিন শাস্তির কথা ঘোষণা করেছেন।
সাহাবি হজরত সাঈদ ইবনে জায়েদ ইবনে আমর ইবনে নুফায়েল (রা.) থেকে বর্ণিত। আরওয়া (নামক এক মহিলা) বাড়ির কিছু অংশ নিয়ে তার সঙ্গে বিবাদ করে। তিনি বলেন, তোমরা ওকে ছেড়ে দাও এবং জমির দাবিও ত্যাগ করো। কারণ, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, যে কেউ বিনা অধিকারে এক বিঘত জমি জবর দখল করবে কেয়ামতের দিন তাকে ওই পরিমাণে সাত স্তর জমিনের বেড়ি পরিয়ে দেওয়া হবে। হে আল্লাহ! সে (আরওয়া) যদি মিথ্যাবাদী হয় তবে তার চোখ অন্ধ করে দিন এবং তার ঘরেই তার কবর দাফন করুন।
বর্ণনাকারী বলেন, পরবর্তী সময়ে আমি আরওয়াকে অন্ধ অবস্থায় দেখেছি, প্রাচীরে আঘাত খেয়ে খেয়ে চলত। সে বলত, সাঈদ ইবনে জায়েদের বদদোয়া লেগেছে। একদিন সে বাড়ির মধ্যে চলাচল করছিল। বাড়ির মধ্যে এক কূপের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় সে তাতে পড়ে যায় এবং কূপই তার কবর হয়। (সহিহ মুসলিম ১৬১০)
সাহাবি হজরত সাঈদ ইবনে জায়েদ ইবনে আমর ইবনে নুফায়েল (রা.) কর্তৃক বর্ণিত এই ঘটনাটি জমির অবৈধ দখল সংক্রান্ত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সাবধানবাণীকে অত্যন্ত শক্তিশালীভাবে তুলে ধরে। এটি প্রমাণ করে, বিনা অধিকারে সামান্য পরিমাণ জমি জবরদখল করাও কেয়ামতের দিন সাত স্তর জমিনের বেড়ি পরার মতো এক মারাত্মক শাস্তির কারণ হতে পারে। এই বর্ণনা মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি স্পষ্ট বার্তা, নিজের অধিকারের প্রতি যত্নশীল হওয়ার পাশাপাশি অন্যের অধিকারের প্রতিও পূর্ণ শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে।
বিশেষ করে আরওয়া নামক মহিলার ঘটনাটি পার্থিব জীবনেও অন্যায় কাজের অনিবার্য পরিণতির এক ভয়ংকর সাক্ষ্য দেয়। সাঈদ ইবনে জায়েদ (রা.)-এর বদদোয়া আল্লাহর দরবারে কবুল হওয়া এবং তার পরিণতিতে আরওয়ার অন্ধত্ব ও বাড়ির কূপেই কবর হওয়ার ঘটনায় স্পষ্ট হয় যে, আল্লাহ মজলুমের ফরিয়াদকে কখনো উপেক্ষা করেন না।
