জান্নাতিরা জাহান্নামিদের যা জিজ্ঞেস করবে
মাইসারা জান্নাত
প্রকাশ: ১১:১৫, ৫ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১১:১৬, ৫ ডিসেম্বর ২০২৫
ছবি: সংগৃহীত
জান্নাত ও জাহান্নাম হলো পরকালীন চিরস্থায়ী ঠিকানা। এই দুই ঠিকানার মধ্যে পার্থক্য কেবল আমলের। মহান আল্লাহ তার প্রিয় বান্দাদের জন্য জান্নাতকে প্রস্তুত রেখেছেন, যেখানে থাকবে অফুরন্ত শান্তি ও নেয়ামত। অন্যদিকে, যারা আল্লাহর আদেশ অমান্য করে তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি ও যন্ত্রণার স্থান জাহান্নাম। সেদিন যখন জান্নাতিরা জান্নাতে নিজেদের আসন গ্রহণ করবে, তখন তারা জাহান্নামিদের অবস্থা দেখে কিছু প্রশ্ন করবে।
সেই প্রশ্ন ও তার জবাবেই লুকিয়ে আছে মানব জীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক শিক্ষা, যা আমাদের সামাজিক দায়িত্ব ও মানবিকতার কথা মনে করিয়ে দেয়। মানুষের প্রতি সহমর্মী না হওয়া এবং মৌলিক ইবাদতে উদাসীনতার কী ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে, তা পবিত্র কোরআনের এই আয়াতগুলোতে স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
মহান আল্লাহ বলেন, ‘তারা (সৎকর্মশীলরা) থাকবে জান্নাতে, তারা জিজ্ঞেস করবে জাহান্নামিদের, কোন জিনিস তোমাদের জাহান্নামে নিয়ে এসেছে? তারা (জাহান্নামিরা) বলবে, আমরা নামাজি ছিলাম না এবং আমরা মিসকিনদের খাবার দিতাম না।’ (সুরা মুদ্দাসসির, আয়াত ৪০-৪৪)
এটা থেকে জানা যায়, সামর্থ্য থাকা সত্বেও কোনো অভাবী মানুষকে খাবার না দেয়া বা সাহায্য না করা মানুষের জাহান্নামে যাওয়ার কারণসমূহের মধ্য থেকে অন্যতম একটি কারণ।
পবিত্র কোরআনের এই আয়াতসমূহ আমাদের জন্য একটি কঠিন সতর্কবার্তা নিয়ে এসেছে। জাহান্নামে যাওয়ার কারণ হিসেবে জাহান্নামিরা কেবল নামাজ পরিত্যাগ করার কথাই বলেনি, বরং এর পাশাপাশি উল্লেখ করেছে মিসকিন বা অভাবী মানুষকে খাদ্য না দেওয়ার অপরাধকেও।
এর মাধ্যমে মহান আল্লাহ বুঝিয়ে দিয়েছেন, ইবাদতের পাশাপাশি মানুষের প্রতি মানুষের দায়িত্ব ও মানবিক কর্তব্য পালন করাও মুমিনের জীবনে কতখানি জরুরি।
সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যদি কেউ তার চারপাশের ক্ষুধার্ত ও দরিদ্র মানুষের প্রতি উদাসীন থাকে এবং তাদের জন্য কোনো উদ্যোগ না নেয়, তবে এই উদাসীনতাই তার জন্য জাহান্নামের পথ প্রশস্ত করতে পারে।
তাই, আল্লাহর ইবাদত এবং সৃষ্টির সেবার মাধ্যমে আমাদের এমন এক ভারসাম্যপূর্ণ জীবনযাপন করতে হবে, যেখানে নামাজ ও জাকাতের মতো মৌলিক ইবাদত যেমন গুরুত্ব পাবে, তেমনি অভাবী মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মানবিক দিকটিও সমানভাবে গুরুত্ব পাবে।
