ভারতীয় চন্দন কাঠ সম্পর্কে যা বলেছেন নবীজি
মাইসারা জান্নাত
প্রকাশ: ১০:১৮, ৬ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১০:২৪, ৬ নভেম্বর ২০২৫
লাল চন্দন। ছবি: সংগৃহীত
চন্দন গাছ সুগন্ধি ও ঔষধি গুণে অনন্য। চন্দনের কাঠ, তেল ও গুঁড়ো শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এতে প্রদাহনাশক, জীবাণুনাশক ও ত্বক শীতল রাখার বিশেষ গুণ রয়েছে। আয়ুর্বেদ, ইউনানি ও প্রাকৃতিক চিকিৎসাশাস্ত্রে চন্দনের ব্যবহার নানা রোগ নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মাথাব্যথা, জ্বর, ত্বকের জ্বালা, প্রস্রাবজনিত সমস্যা ও মানসিক অস্থিরতায় এটি কার্যকর বলে প্রমাণিত। নবীজি (সা.)-ও চন্দন কাঠের ঔষধি গুণ সম্পর্কে বলেছেন।

হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, উম্মে কায়েস (রা.) বলেন, একদা আমার এক ছেলে সন্তানকে নিয়ে নবীজি (সা.)-এর নিকট গেলাম। ছেলেটির আলজিহ্বা ফোলার কারণে আমি তা দাবিয়ে দিয়েছিলাম। তখন নবীজি (সা.) বললেন, এ রকম রোগ-ব্যাধি দমনে তোমরা নিজেদের সন্তানদের কেন কষ্ট দিয়ে থাকো? তোমরা ভারতীয় চন্দন কাঠ ব্যবহার করো। কেননা তাতে সাত রোগের নিরাময় আছে। তার মধ্যে পাঁজরের ব্যথা বা পক্ষাঘাত রোগ অন্যতম। আলজিহ্বা ফোলার রোগে এটির ধোঁয়া নাক দিয়ে টেনে সেবন করানো যায়। পাঁজরের ব্যথার রোগী বা পক্ষাঘাত রোগীকে তা সেবন করানো যায়।
সুফিয়ান (রহ.) বলেন, আমি যুহরীকে বলতে শুনেছি, তিনি আমাদের কাছে দুটির কথা বর্ণনা করেছেন, আর পাঁচটির কথা বর্ণনা করেননি। (সহিহ বুখারি)

এই হাদিসে নবীজি (সা.) চন্দন কাঠের চিকিৎসাগত উপকারিতা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন। বিশেষ করে ভারতীয় চন্দনকে তিনি একাধিক রোগের নিরাময়ের উপায় বলেছেন। নবীজির নির্দেশিত এই ভেষজ কাঠ আজও প্রাসঙ্গিক, কারণ আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানও এর গুণাগুণের সত্যতা স্বীকার করেছে।
চন্দন গাছ মূলত দক্ষিণ এশিয়ায় জন্মে। ভারতের কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ ও কেরালা প্রদেশে এর চাষ সবচেয়ে বেশি। শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চলেও চন্দনের কিছু প্রজাতি দেখা যায়। উষ্ণ ও শুষ্ক জলবায়ু চন্দন চাষের জন্য উপযোগী। কাঠ ঘন ও টেকসই হওয়ায় এটি দীর্ঘদিন টিকে থাকে। এর সবচেয়ে মূল্যবান অংশ হলো অন্তঃকাঠ, যেখান থেকে স্থায়ী সুগন্ধিযুক্ত তেল পাওয়া যায়।
