১৫ বছরে ৬’শর বেশি বাংলাদেশীকে বিএসএফ গুলি করে হত্যা করেছে: যুক্তফ্রন্টের নিন্দা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৬:৫৪, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১৬:৫৯, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫
১৫ বছরে ৬’শর বেশি বাংলাদেশীকে বিএসএফ গুলি করে হত্যা করেছে: যুক্তফ্রন্টের নিন্দা। ছবি: সংগৃহীত
১৫ বছরে ছয়শতাধিক বাংলাদেশী নাগরিককে বিএসএফ গুলি করে হত্যা করেছে।গণতান্ত্রিক যুক্তফ্রন্টের পক্ষ আজ রবিবার বিবৃতির মাধ্যমে এই দাবি করা হয়।
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, বার বার দুই দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর পতাকা বৈঠক ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে সীমান্ত হত্যা শুণ্যে নামানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরও ভারতের বিএসএফ অব্যাহতভাবে বাংলাদেশী নাগগরিকদেরকে হত্যা করা হচ্ছে।
তারা বলেন, গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে গত ১৫ বছরে ছয়শতাধিক বাংলাদেশী নাগরিককে বিএসএফ গুলি করে হত্যা করেছে। গত জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ১১ মাসে ২৮ জনকে হত্যা করা হয়েছে। সর্বশেষ গত ৪ ডিসেম্বর ২০২৫ বৃহস্পতিবার লালমনিহাটের পাটগ্রামে সীমান্তের ৩০ গজ ভিতরে সবুজ ইসলাম এবং মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় সীমান্ত এলাকায় গরু চরানোর সময় সুকিরাম বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছে।
বিবৃতিতে নেতারা আরও বলেন, আান্তর্জাতিক আইনে কোন বাহিনীকে বিশ্বের কোথাও নিরস্ত্র- বেসামরিক নাগরিকদের গুলি করার অনুমতি দেয়না। সীমান্তে কোন লেথাল উইপেন (প্রাণঘাতি অস্ত্র) ব্যবহার করা হবেনা বলে প্রতিশ্রুতি দিলেও ভারতের বিএসএফ এর গুলিতে নিরীহ বাংলাদেশীরা প্রাণ হারাচ্ছে। বিএসএফ এর পক্ষ থেকে বার বার হত্যার শিকার বাংলাদেশীদেরকে গরু চোরাচালনকারী ও অনুপ্রবেশকারী হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। কিন্তু যদি তর্কের খাতিরে ধরেও নেওয়া হয় যে তারা চোরাচালানকারী বা অনুপ্রবেশকারী তাহলেই কি ভারত বা বিশ্বের কোন দেশের আইনে আছে তাদের গুলি করে হত্যা করা যাবে? অপরাধী হলে তাদের গ্রেপ্তার করে প্রচলিত আইনে বিচার করতে পারে। তা না করে ক্রমাগত বিএসএফ বাংলাদেশীদের হত্যা করে চলেছে যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মানবাধিকারের চরম লংঘন।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, সীমান্তে হত্যার শিকার বেশিরভাগই সীমান্তবর্তী এলাকার দরিদ্র মানুষ। অনেকে কৃষি কাজ করতে গিয়ে ভুলবশত জিরো লাইনের কাছে চলে গেলে গুলি বর্ষণের শিকার হয়। ফেলানীর লাশ সীমান্তে কাঁটাতারে ঝুলে থাকার ঘটনা বাংলাদেশীরা কোনদিন ভুলতে পারবে না।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে না পারাকে বাংলাদেশ সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি ও ক‚টনৈতিক ব্যর্থতাকে দায়ী করেন। তারা বলেন, অবিলম্বে নতজানু পররাষ্ট্রনীতি পরিহার এবং সীমান্ত হত্যা বন্ধে কার্যকর কূটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করে দ্বিপাক্ষিক এমনকি আন্তর্জাতিক ফোরামে তোলার জোর দাবি জানান।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন বাসদের সাধারণ সম্পাদক কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ, সিপিবির সভাপতি সাজ্জাদ জহির চন্দন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ ক্কাফী রতন, বাংলাদেশ জাসদ-এর সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পদাক মোশরেফা মিশু, বাসদ (মার্কসবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী প্রমুখ।
