দেশে ফিরলে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা পাবেন তারেক রহমান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৬:২৫, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫
তারেক রহমান। ফাইল ছবি।
বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া সংকটপূর্ণ অবস্থায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ অবস্থায় তার বড় ছেলে ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার আলোচনা রাজনৈতিক অঙ্গনে এক নতুন মাত্রা পেয়েছে।
যদিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্টে তারেক রহমান জানিয়েছেন, ‘দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত কেবল তার ব্যক্তিগত নিয়ন্ত্রণে নেই।
এমন নানা জল্পনার মধ্যে কেউ কেউ দাবি করছেন, তার দেশে ফিরতে দেরির অন্যতম কারণ নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট উদ্বেগ। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, তারেক রহমান চাইলে তাকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়া হবে। দেশে ফিরলে বিমানবন্দর থেকেই তিনি স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) সুরক্ষা পেতে পারেন, যা রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ বিশেষ মর্যাদাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের জন্য নির্ধারিত।
খালেদা জিয়াকেও ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ তালিকাভুক্ত করে এসএসএফ সুরক্ষা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর দাবি, তারেক রহমানের দেশে ফেরা ঘিরে কোনো নিরাপত্তা জটিলতা নেই; ব্যক্তিগতভাবেও তিনি ঝুঁকিমুক্ত। তার জন্য সব ধরনের উচ্চমাত্রার নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রস্তুত রয়েছে।
সূত্র বলছে, গুঞ্জন থাকলেও বুধবার (৩ ডিসেম্বর) পর্যন্ত দেশে ফেরার কোনো আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি নেননি তারেক রহমান। এদিন চীন ও যুক্তরাজ্য থেকে চিকিৎসকদের আরও দুটি দল ঢাকায় এসে খালেদা জিয়ার কিছু গুরুত্বপূর্ণ মেডিকেল পরীক্ষা করবেন। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়া যাবে কি না, সে বিষয়েও মতামত দেবেন তারা। এই মতামতের ওপর অনেকটা নির্ভর করছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠ সন্তান তারেক রহমান কবে দেশে ফিরবেন।
দলীয় একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হলে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা সে মতামত দিলে সেটা অনুসরণ করা হবে। রিপোর্ট আশঙ্কাজনক হলেও বিদেশে নেওয়ার সক্ষমতা যাচাই করা হবে। সেটি স্বল্প দূরত্বের মধ্যে হলে সিঙ্গাপুরকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। সে ক্ষেত্রে তারেক রহমান ওই দেশে যাবেন মায়ের পাশে থাকতে। যদি খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার পরিস্থিতি না থাকে, তারেক রহমান খুব দ্রুত দেশের উদ্দেশে রওনা হবেন।
আবার আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে তার দেশে ফেরার সম্ভাবনা আছে।
এদিকে, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে তারেক রহমান সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি আশা প্রকাশ করেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে খুব শিগগিরই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশে ফিরবেন।
২৩ নভেম্বর থেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়া। ২৯ নভেম্বর তারেক রহমান ফেসবুকে লেখেন, দেশে ফিরতে তার সিদ্ধান্ত গ্রহণের ‘একক ক্ষমতা নেই’। এ বক্তব্যের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা শুরু হয়। তবে বিএনপি নেতারা নিরাপত্তাজনিত কারণে তিনি ফিরছেন না এমন ইঙ্গিত দিলেও সুনির্দিষ্টভাবে কোনো ঝুঁকির কথা উল্লেখ করেননি তারেক।
অন্যদিকে, লন্ডনে অবস্থানকারী তারেক রহমানের পুরোনো বাংলাদেশি পাসপোর্ট কার্যকারিতা হারিয়েছে। দেশে ফিরতে হলে তাকে নতুন পাসপোর্ট বা ট্রাভেল পাস নিতে হবে। সরকার জানিয়েছে, তিনি চাইলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ট্রাভেল পাস দেওয়া হবে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, তারেক রহমান এর জন্য এখনো আবেদন করেননি; আবেদন করলেই তা ইস্যু করা হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীও বলেছেন, বাংলাদেশে কারও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ নেই। প্রয়োজনে তারেক রহমানকেও বিশেষ নিরাপত্তা দিতে সরকার প্রস্তুত।
