ড. ইউনূসকেই জুলাই সনদ আদেশ জারি করতে হবে: নাহিদ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪:৫৬, ২ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১৫:০৬, ২ নভেম্বর ২০২৫
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, জুলাই সনদ সংক্রান্ত আদেশ অবশ্যই প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকেই জারি করতে হবে। রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে এই আদেশ জারি করা হলে তা হবে “কফিনে শেষ পেরেক”। কারণ রাষ্ট্রপতির এই বিষয়ে আইনগত ক্ষমতা নেই এবং জনগণও তা মেনে নেবে না।
রবিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন নাহিদ ইসলাম।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট। আমরা রাষ্ট্রের সংস্কার চাই এবং গণপরিষদ নির্বাচনের রূপরেখা দিয়েছি। কিন্তু অনেক দল তা বুঝতে পারেনি। কেউ কেউ সনদে স্বাক্ষর করেও অনৈক্য সৃষ্টি করেছে—এটি জাতির সঙ্গে প্রতারণা।”
তিনি মনে করেন, যদিও স্বাক্ষরের সময় শেষ হয়ে গেছে, তবুও সরকার চাইলে আইনি ভিত্তি দেওয়া এখনও সম্ভব।
এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, “ফ্যাসিবাদবিরোধী দলগুলোর মধ্যে মতভেদ থাকলেও আওয়ামী লীগ প্রশ্নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, অনেকে আওয়ামী লীগকে প্রশ্রয় দিচ্ছে—তারা বিভিন্ন দলে প্রবেশ করে নির্বাচনকে ভণ্ডুল করতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন হওয়া উচিত, এবং গণভোট জাতীয় নির্বাচনের দিন বা তার আগে-পরে হলেও এনসিপির আপত্তি নেই।“ তবে এটি নিয়ে বাড়াবাড়ি করা সমর্থনযোগ্য নয়,” যোগ করেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “গণভোটে জনগণ হ্যাঁ বললে হ্যাঁ, না বললে না—এটি তাদের সিদ্ধান্তের ওপরই নির্ভর করবে। বিএনপি যদি গণভোটের বিপক্ষে অবস্থান নেয়, জনগণ তা ভালোভাবে নেবে না।”
তিনি অভিযোগ করেন, “একদল সংস্কার চায়, আরেক দল নির্বাচন পিছিয়ে দিতে চায়। কিন্তু আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। যদি নোট অব ডিসেন্ট দেওয়া থাকে, তবে গণভোটের প্রয়োজন পড়ে না।”
এক প্রশ্নের জবাবে নাহিদ বলেন, “বিগত ফ্যাসিবাদকে বারবার সমর্থন দিয়েছে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারত। জুলাই সনদের বিষয়ে তাদের অনুশোচনা প্রকাশ করা হলে তবেই সম্পর্ক পুনর্গঠন সম্ভব।”
তিনি বলেন, “সংবিধানে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি টাঙানোর কোনও সুযোগ নেই। কারণ তিনি ফ্যাসিবাদের প্রতীক হয়ে গেছেন। অতীত সরকার জনগণের ওপর চাপিয়ে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেছিল, যা আর জনগণ মেনে নেবে না।”
নির্বাচন প্রসঙ্গে এনসিপি আহ্বায়ক জানান, এককভাবে প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া চলছে, বিভিন্ন শাখা কমিটি গঠনের কাজও এগিয়ে চলছে।“ জোট গঠনের বিষয়ে ৯টি দলের সঙ্গে আলোচনা চলছে, তবে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি,” বলেন তিনি।
শাপলা প্রতীক সংক্রান্ত প্রশ্নে তিনি বলেন, “নির্বাচন থেকে আমাদের দূরে রাখতেই কমিশন ষড়যন্ত্র করছে; যা এখন করেছে, তা এক মাস আগেই করতে পারত। নতুন দল হিসেবে আমাদের প্রতি আরও আন্তরিক হওয়া উচিত ছিল।”
ছাত্র প্রতিনিধি দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। তবে নির্বাচন ঘিরে নানা কৌশল দেখা যাচ্ছে।”
নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, “জুলাই ঘোষণাপত্রের মতো সনদের অনেক টেক্সট পরিবর্তন করা হয়েছে। সরকার মূলত একটি দলের স্বার্থে কাজ করায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।”
