রোববার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫

| ২৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

শপথ কি ভঙ্গ হলো না সংশ্লিষ্টদের?

প্রকাশ: ১৮:৪৪, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫

শপথ কি ভঙ্গ হলো না সংশ্লিষ্টদের?

কবির য়াহমদ

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে হুট করে রাষ্ট্রের ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ ঘোষণা করে এসএসএফ-এর নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত যদি ব্যক্তি থেকে পরিবার পর্যন্ত গড়ায়, তবে সামনে বিশাল রাজনৈতিক সঙ্কট অপেক্ষা করছে।

খালেদা জিয়ার বর্তমান যে শারীরিক অবস্থা, তাতে এসএসএফ-এর নিরাপত্তা তার জন্য থাকা আর না থাকা সমান কথা। এখন খালেদা জিয়াকে দেওয়া সরকারের এই নিরাপত্তা যদি তার পরিবারের সদস্য অর্থাৎ দেশে এসে তারেক রহমানও পেয়ে থাকেন, তবে অপরাপর রাজনৈতিক দল কি এটা মানবে?

তখন যদি জামায়াতে ইসলামী তাদের আমির শফিকুর রহমান; এনসিপি তাদের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, এমনকি গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নুরও অনুরূপ নিরাপত্তা দাবি করেন, তবে সেটা কি অযৌক্তিক হবে? এই দাবি যদি সরকার না মানে, তবে এটা কি ‘বৈষম্য’ হবে না?

বিএনপি যে সব আসনে মনোনয়ন ঘোষণা করেছে, সেখানে প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন খালেদা জিয়া। তার জন্যে বিএনপি রেখেছে ৩টি আসন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে তিনি আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে যাচ্ছেন। একটা রাজনৈতিক দলের একজন মনোনীত প্রার্থীকে কেবল ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ ঘোষণা কি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির নমুনা। রাষ্ট্র যেখানে একজন প্রার্থীকে আগেভাগে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ ঘোষণা করেছে, সেখানে তার প্রতিদ্বন্দ্বীরা কি বৈষম্যের শিকার হবেন না?

হাসপাতালে ভর্তি, অবস্থা গুরুতর—এই যুক্তিতে কি তবে বিশেষ অনুরাগ প্রকাশিত হলো সরকারের? অথচ সরকারের সবাইকে রাগ-অনুরাগের বাইরে থেকে কাজ করার কথা। এখানে কি তবে শপথ ভঙ্গ হলো না সংশ্লিষ্টদের? এর কী জবাব দেবে তারা?

সরকারের কেউ বলতে পারেন তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী তিনি; এটা কেউ অস্বীকার করে না, তবে একই সঙ্গে সবচেয়ে বড় সত্য হচ্ছে তিনি একটি দল বিএনপির চেয়ারপারসন। তিনি রাজনীতির মধ্যে এখনো আছেন। কেবল দলের প্রধানের দায়িত্বই পালন করছেন না, তিনি আগামী সংসদ নির্বাচনে তিন-তিনটি আসনে নির্বাচনের জন্যে মনোনীত। হতে পারে সারা দেশে তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা আছে, তবু তিনি এখনো একটামাত্র দলের নেতা; এবং এই দলের সমর্থক দেশের সবাই নয়।

খালেদা জিয়া কিংবা অন্য কাউকে বিশেষ সম্মান জানানোতে আমার আপত্তি নাই। কিন্তু রাষ্ট্রকে পরিচালিত করতে হয় রীতিনীতির মাধ্যমে। এখানে অতিরিক্ত কিছু করতে গেলে যে বিপত্তি বাধে, তা মোকাবিলার প্রস্তুতি রাখা উচিত।

খালেদা জিয়া যদি সংসদ নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, তবে এই ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’র তকমা কি ততদিন পর্যন্ত থাকবে? তারেক রহমান যদি দেশে ফেরেন, তবে ব্যক্তি খালেদা জিয়ার এই বিশেষ নিরাপত্তা কি তার জন্যেও থাকবে—এসব পরিষ্কার করা জরুরি। তা না হলে ঠিক এই ইস্যু ধরে বিশাল একটা সঙ্কট অপেক্ষা করছে।

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনকে সামনে রেখে সরকারকে যেখানে যতটা সম্ভব অনুরাগ-বিরাগের বশবর্তী না হয়ে রীতিনীতির মধ্যে থাকা দরকার ছিল, সেখানে তারা এসবের মাধ্যমে আরও ঝামেলার দিকে এগোচ্ছে কিনা কে জানে!

লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট

* মতামত লেখকের নিজস্ব

আরও পড়ুন

শীর্ষ সংবাদ:

৫ বছরে বৈদেশিক ঋণ বেড়েছে ৪২%
৮-১৫ ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচনের তফসিল
জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট আয়োজনে ইসি প্রস্তুত, প্রধান উপদেষ্টাকে সিই
নির্বাচনী ইশতেহারে অর্থ, পেশীশক্তি ও ধর্মের অপব্যবহার বিষয়ে অঙ্গীকার চায় টিআইবি
সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে ‘ব্যর্থ’: টিআইবি
বাড়ল ভোজ্যতেলের দাম
কৃষি কর্মকর্তাদেরও লটারির মাধ্যমে পদায়ন: কৃষি উপদেষ্টা
আরও ১০০ কোল্ড স্টোরেজ: কৃষি উপদেষ্টা
ভোটের দায়িত্ব পাচ্ছেন না বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তারা
১৯৭১ সালেই মানুষ তাদের কর্মকাণ্ড দেখেছে : তারেক রহমান
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সিইসিসহ চার নির্বাচন কমিশনারের বৈঠক
রোজা–পূজা নিয়ে মন্তব্য : জামায়াত প্রার্থী শিশির মনিরের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার মামলা
৭ ডিসেম্বর ১৯৭১ : পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে আত্মসমর্পণের আহ্বান
নতুন জোটের ঘোষণা দিল এনসিপি
রাজবাড়ীতে মুক্তিযোদ্ধাদের সংরক্ষিত কবরস্থানে নাশকতা
প্রেস সচিবের ফেসবুক পোস্ট; ৩ কয়লাখনি থেকে কয়লা না তোলা ভুল ছিল
আজ নোয়াখালী মুক্ত দিবস
শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
শেখ হাসিনাসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি শুরু
বিটিআরসির সামনে মোবাইল ব্যবসায়ীদের সড়ক অবরোধ