তাহলে নির্বাচনের সময়ে কী হবে? 

রাজনৈতিক কর্মসূচিকেন্দ্রিক অস্থিরতা নেই দেশে, তবু সামরিক-বেসামরিক বাহিনীর সদস্যদের দিয়ে খোদ ঢাকাকেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না সরকার। তাই, নির্বাচনের সময়ে কী হবে? তখন বিএনপি চাইবে ‘চর দখল’ করতে; জামায়াতও চাইবে একই; আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগীরা চাইবে নির্বাচন ঠেকিয়ে দিতে। নির্বাচন করতে চাইলে তখন আওয়ামী লীগকে ঠেকাতে হবে, সুষ্ঠু নির্বাচন চাইলে তখন জামায়াতকে ঠেকাতে হবে, বিএনপিকে ঠেকাতে হবে।

এখন যখন একটা ঢাকাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হিমসিম খাচ্ছে, ব্যর্থ হচ্ছে সরকার, তখন কী হবে, সারা দেশে কী করবে? সকল রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে মাঠে নামিয়ে, সকল সেনানিবাস খালি করেও কি সম্ভব? তখন কি জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর প্রয়োজন পড়বে, তখন কি ন্যাটো বাহিনীর প্রয়োজন পড়বে? ধুর, তারা তো আর লাখে-লাখে সৈন্যসামন্ত, এমনকি একটা লোকও পাঠাতে পারবে না।

তাহলে উপায়! উপায় নিশ্চয় আছে। সে উপায় হচ্ছে ড. ইউনূস সরকারকে বাদ দিয়ে নির্বাচনের দায়িত্ব তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ছেড়ে দেওয়া। কারণ এরা আস্থা সঙ্কটে রয়েছে। বিএনপি-জামায়াত-এনসিপি প্রত্যেকেই এদেরকে ‘সরকার’ ভাবতে পারছে না। প্রত্যেকেই এদের ওপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে চাইছে। প্রত্যেকেই এদেরকে ‘গোলাম’ ভাবতে বসেছে। প্রত্যেকেই ভাবছে—তোমাদেরকে বসিয়েছি আমরা, তাই ‘গোলাম’ হয়ে ‘মনিবের বিরুদ্ধে’ যাওয়ার সুযোগ নাই তোমাদের। ইউনূস সরকারের স্বাতন্ত্র নেই, প্রত্যেকেই তাদের ভাবছে ‘নিজেদের সরকার’ এবং এই ভাবনা থেকেই তাদের চাওয়া—‘আমাদের সরকার’ ক্ষমতায় থাকাকালে আমরা যদি একটু বেশি সুযোগ–সুবিধা না পাই, তবে কখন পাব!

লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট

* মতামত লেখকের নিজস্ব