‘মিনেসোটা প্রোটোকল’ মেনে শুরু জুলাই শহীদদের শনাক্তকরণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩:৫৩, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫
‘মিনেসোটা প্রোটোকল’ মেনে শুরু জুলাই শহীদদের শনাক্তকরণ। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করা জুলাই আন্দোলনে অজ্ঞাত শহীদদের পরিচয় নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের নির্দেশিকায় থাকা ‘মিনেসোটা প্রোটোকল’ অনুসরণ করেই পুরো ফরেনসিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছেন সিআইডি প্রধান মো. ছিবগাত উল্লাহ।
রবিবার (৭ ডিসেম্বর) সকালে রায়েরবাজার কবরস্থানে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শাহাদাৎবরণকারী অজ্ঞাত শহীদদের লাশ উত্তোলনপূর্বক শনাক্তকরণ কার্যক্রম’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। পরে মরদেহ উত্তোলনের কাজ শুরু হয়।
এসময় সিআইডি প্রধান জানান, রায়েরবাজারে প্রাথমিকভাবে ১১৪টি কবর চিহ্নিত করা হয়েছে। মৃতদেহ উত্তোলন, ডিএনএ সংগ্রহ এবং পরিচয় শনাক্তের জন্য কবরস্থানেই একটি অস্থায়ী ফরেনসিক ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে এবং কাজ শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক প্রটোকল অনুযায়ী মরদেহ উত্তোলন, পোস্টমর্টেম, টিস্যু বা বোন স্যাম্পল সংগ্রহ—সবই ধাপে ধাপে হবে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এই প্রক্রিয়ায় সকল শহীদের পরিচয় বের করতে পারব।”
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আর্জেন্টিনার খ্যাতনামা ফরেনসিক অ্যানথ্রোপোলজিস্ট লুইস ফনডিব্রাইডা, যিনি গত ৪০ বছরে বিশ্বের ৬৫টি দেশে গণহত্যা বা সংঘর্ষে নিহতদের পরিচয় শনাক্তের কাজ করেছেন।
সিআইডি প্রধান জানান, জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার মাধ্যমে লুইস ঢাকায় এসে এই অপারেশন পরিচালনার নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
ছিবগাত উল্লাহ বলেন, “পরিচয় শনাক্ত হওয়ার পর স্বজনরা চাইলে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। আর কেউ নিতে না চাইলে ধর্মীয় মর্যাদা বজায় রেখে পুনরায় দাফন করা হবে।”
এ পর্যন্ত ১০ জন স্বজন আবেদন করেছেন, তবে আরও কেউ চাইলে সিআইডির হটলাইন বা কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে পারবেন।
সিআইডি প্রধান জানান, “আমরা জানি না কোন কবরে কে আছেন। তাই সময়সীমা বলা সম্ভব নয়। তবে ধাপে ধাপে পুরো ‘মিনেসোটা প্রোটোকল’ অনুযায়ী কাজ করা হবে।”
সিটি করপোরেশন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ, ডিএমপি ও বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থাকে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
সাংবাদিকদের দেহাবশেষের ছবি না তোলার অনুরোধ জানিয়ে সিআইডি প্রধান বলেন, “কার্যক্রম সংবেদনশীল। তাই মরদেহ উত্তোলন বা পরীক্ষার সময় ছবি তোলা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করছি।”
এর আগে গত ২ আগস্ট রায়েরবাজার কবরস্থানে গিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী শহীদদের শনাক্তকরণে সরকারের উদ্যোগ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
তিনি বলেছিলেন, “সবাই রাজি হলে ডিএনএ’র মাধ্যমে শনাক্ত করা হবে। কেউ মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নিতে চাইলে সেভাবে ব্যবস্থা করা হবে।”
