তফসিলের তারিখ ও গণভোট নিয়ে ইসির বৈঠক আজ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০৬, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ০৮:১৪, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল কবে ঘোষণা করা হবে—সে বিষয়ে আজ রবিবার (৭ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনের (ইসি) গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে সিদ্ধান্ত হতে পারে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এই বৈঠকে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট—উভয়ের সার্বিক প্রস্তুতি পর্যালোচনা করা হবে।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তফসিল ঘোষণার আগে যেসব প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন ছিল, সেগুলোর সবই সম্পন্ন হয়েছে। আগামী বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে কমিশন। প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের পরই তফসিল ঘোষণা করা হয়। তাই ধারণা করা হচ্ছে, বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। আজকের সভায় তারিখ চূড়ান্ত হতে পারে।
অন্তর্বর্তী সরকারও একাধিকবার জানিয়েছে—ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন হবে। একইভাবে ইসিও নিশ্চিত করেছে—ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণা করা হবে।
একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট, বড় চ্যালেঞ্জ ভোটকেন্দ্র-ব্যবস্থাপনা
এই নির্বাচনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পাশাপাশি জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোটও অনুষ্ঠিত হবে। অর্থাৎ ভোটারদের পড়বে দুটি ব্যালট। এতে সময় ব্যবস্থাপনা ও গোপন কক্ষ ব্যবস্থাপনায় বাড়ছে চ্যালেঞ্জ।
ইসি ইতিমধ্যে রাজধানীর একটি কেন্দ্রে মক ভোটিং করে দেখেছে—গণভোটের ব্যালট পড়তে ভোটারদের সময় বেশি লেগেছে। সব কেন্দ্রেই আলাদা অবকাঠামো না থাকায় প্রতিটি ভোটকক্ষে একটির বদলে দুটি গোপন কক্ষ স্থাপনের প্রস্তাব এসেছে। আজকের সভায় এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পাশাপাশি ভোট গ্রহণের সময় এক ঘণ্টা বাড়ানোর কথাও বিবেচনায় রয়েছে।
ইসি আগামী নির্বাচনে ভোট গ্রহণের জন্য ৪২ হাজার ৭৬১টি ভোটকেন্দ্র এবং ২ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৯টি ভোটকক্ষ নির্ধারণ করেছে। এটি ঠিক করা হয়েছিল শুধু সংসদ নির্বাচনের জন্য। কিন্তু এখন সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে একই সঙ্গে গণভোটও অনুষ্ঠিত হবে। একজন ভোটারকে দুটি করে ভোট দিতে হবে। এতে ভোট দিতে সময় বেশি লাগবে। এ জন্য ভোটকেন্দ্র বা ভোটকক্ষ বাড়াতে হবে কি না, তা বুঝতে রাজধানীর একটি ভোটকেন্দ্রে ‘মক ভোটিং’ (ভোটের মহড়া) এর আয়োজন করেছিল ইসি। ওই ‘মক’ ভোটের প্রাথমিক তথ্য পর্যালোচনায় ইসি বলেছে, প্রতিটি ভোটকক্ষে একটির জায়গায় দুটি করে গোপন কক্ষ (যেখানে গিয়ে ভোটার ব্যালট পেপারে সিল দেন) স্থাপন করা হলে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা আর বাড়াতে হবে না।
ইসি সূত্র জানায়, মক ভোটিংয়ে দেখা গেছে, ভোটারদের অনেকে গণভোটের ব্যালট পেপার পড়ে ভোট দিয়েছেন। এতে ভোট দিতে সময় বেশি লেগেছে। আবার সব ভোটকেন্দ্রে গোপন কক্ষ বাড়ানোর মতো অবকাঠামোও নেই। অন্যদিকে ভোটকেন্দ্র বাড়াতে গেলেও কিছু সমস্যা আছে। বিশেষ করে গ্রাম এলাকায় অনেক জায়গায় এ রকম অবকাঠামো নেই। মক ভোটিংয়ের অভিজ্ঞতার পাশাপাশি মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছ থেকেও পরামর্শ নিয়েছে ইসি।
সব মিলিয়ে গোপন কক্ষ বাড়ানো এবং ভোট গ্রহণের সময় এক ঘণ্টা বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। ইসি আগেই জানিয়েছিল আজকের বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
গতকাল শনিবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এক কর্মশালায় ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, নির্বাচন আয়োজনের জন্য ইসি পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে।
