ঢাকা–ময়মনসিংহ রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ, যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯:৪৫, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার সাতখামাইর এলাকায় বলাকা কমিউটার ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল। ছবি: সংগৃহীত
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার সাতখামাইর এলাকায় বলাকা কমিউটার ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল হয়ে ঢাকার সঙ্গে ময়মনসিংহের রেল যোগাযোগ দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ রয়েছে।
শনিবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ইঞ্জিন বিকল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ময়মনসিংহ-ঢাকা রুটের ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণ থেমে যায় এবং আশপাশের কয়েকটি স্টেশনে কমপক্ষে চার-পাঁচটি ট্রেন আটকে পড়ে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের বর্ণনা অনুযায়ী, ময়মনসিংহ থেকে ঢাকার উদ্দেশে আসা বলাকা কমিউটার ট্রেনটি কাওরাইদ স্টেশনে প্রবেশ করার পরই হঠাৎ তীব্র শব্দ হয়। ট্রেন যখন স্টেশন ছেড়ে গতি নিতে যাচ্ছে, তখনই ইঞ্জিন থেকে বিকট আওয়াজ শোনা যায় এবং কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ট্রেনের গতি কমে আসে। যাত্রীরা জানান, সেই মুহূর্তে ইঞ্জিনের ভেতর থেকে ছিটকে পড়া মবিল বা তেল যাত্রীদের গায়ে এসে লাগায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
পরিস্থিতি বোঝার আগেই অনেকেই দ্রুত ট্রেন থেকে নেমে পড়েন।
শ্রীপুর রেলস্টেশনের মাস্টার মোঃ শামীম বলেন, ইঞ্জিন হঠাৎ বিকল হয়ে যাওয়ায় রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখতে হয়েছে। বিকল্প ইঞ্জিন আনার জন্য তারা রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছে এবং জরুরি ভিত্তিতে কাজ চলছে। তবে কখন ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হবে, তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।
রেলওয়ের অন্য কর্মকর্তারা জানান, ইঞ্জিনের যান্ত্রিক ত্রুটি বেশ গুরুতর হওয়ায় এটি দ্রুত সরানো সম্ভব হয়নি। নতুন ইঞ্জিন সংযুক্ত না করা পর্যন্ত রেল চলাচল স্বাভাবিক হওয়ার সুযোগ নেই।
ঘটনার কারণে শ্রীপুর, মাওনা, কাওরাইদ, মীরেরবাজার ও ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটের আরও কয়েকটি স্টেশনে ট্রেন দাঁড়িয়ে যায়। দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করে থাকা যাত্রীরা জানান, কোথাও কোনো পরিবহন বিকল্প নেই, ফলে তাঁরা ট্রেনের মধ্যেই আটকা পড়ে আছেন। অনেকে জানিয়েছেন, তীব্র ভিড়, গরম ও অনিশ্চয়তার কারণে যাত্রীদের দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়।
এ ধরনের ঘটনা শ্রীপুর এলাকায় নতুন নয় বলেও জানা যায়। এর আগে একই রুটে অন্য কমিউটার ট্রেন ও লোকাল ট্রেনে এ ধরনের যান্ত্রিক সমস্যা দেখা দিয়েছে, যার ফলে বহু যাত্রী একইভাবে ভোগান্তিতে পড়েছিলেন।
রেলওয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পুরোনো ইঞ্জিন এবং নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের ঘাটতির কারণে এসব সমস্যা বারবার দেখা দিচ্ছে।
ঘটনাস্থলে রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগ কাজ শুরু করলেও ট্রেন চলাচল পুরোপুরি চালু হতে আরও সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যাত্রীরা দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার দাবি জানিয়েছেন।
