আপ্যায়নে ৮৩ কোটি টাকার দাবি ‘অসত্য ও পরিকল্পিত প্রপাগান্ডা’
বরাদ্দ ৬৩ লাখ টাকা, ব্যয় ৪৫ লাখ ৭৭ হাজার: জানাল সরকার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:৫৮, ৭ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১৩:৩৭, ৭ নভেম্বর ২০২৫
ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ব্যয় নিয়ে ‘অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি’ রোধে বিস্তারিত হিসাব প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) রাতে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পাঠানো এক সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়, কমিশনের আপ্যায়ন খাতে ৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ের দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং বিভ্রান্তিকর।
বিবৃতিতে বলা হয়, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ থেকে কার্যক্রম শুরু করার পর ২০২৪-২৫ ও ২০২৫-২৬ অর্থবছরে কমিশনের মোট বাজেট ছিল ৭ কোটি ২৩ লাখ ৩১ হাজার ২৬ টাকা। এর মধ্যে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে মাত্র ১ কোটি ৭১ লাখ ৩১ হাজার ১২৬ টাকা, যা বরাদ্দের ২৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
আপ্যায়ন খাতে সীমিত ব্যয়
সরকার জানায়, মোট বরাদ্দের মধ্যে আপ্যায়ন খাতে ছিল ৬৩ লাখ টাকা, যার মধ্যে ব্যয় হয়েছে ৪৫ লাখ ৭৭ হাজার ৬৮৫ টাকা। এই অর্থের বড় অংশই ব্যয় হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক, আলোচনাসভা এবং কমিশনের নিজস্ব সভাগুলোতে নাশতা, মধ্যাহ্নভোজ ও নৈশভোজের জন্য।
প্রথম পর্যায়ে ৪৪টি বৈঠকে আপ্যায়ন বাবদ খরচ হয়েছে ৪ লাখ ৯১ হাজার টাকা। দ্বিতীয় পর্যায়ে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ২৩টি সভায় ব্যয় হয় ২৮ লাখ ৮৩ হাজার ১০০ টাকা—যার প্রতিদিনের গড় খরচ ছিল ১ লাখ ২০ হাজার টাকার কম। তৃতীয় পর্যায়ের সাতটি বৈঠকে ৩০টি দলের প্রতিনিধির অংশগ্রহণে ব্যয় হয় ৭ লাখ ৮ হাজার ৬০০ টাকা।
নিজস্ব সভা ও বিশেষজ্ঞ বৈঠকের ব্যয়
কমিশনের নিজস্ব ৫০টি সভায় ব্যয় হয়েছে মাত্র ১ লাখ ৫ হাজার ৫২০ টাকা। নাগরিক সমাজ, পেশাজীবী এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে ১৩টি অনুষ্ঠানে ব্যয় হয়েছে ২ লাখ ৩৪০ টাকা। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ১৪টি বৈঠকে ব্যয় হয়েছে মাত্র ৩০ হাজার ৯৬০ টাকা, যেখানে কোনো বিশেষজ্ঞ সম্মানী বা ভাতা নেননি।
এছাড়া, ৯ মাসে বিদেশি কূটনীতিক, দেশি-বিদেশি প্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা ও গণমাধ্যমকর্মীদের আপ্যায়নে মোট ব্যয় হয়েছে ২ লাখ টাকা।
সরকারের প্রতিক্রিয়া
সরকার বলেছে, “৮৩ কোটি টাকার দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এটি কমিশনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার একটি পরিকল্পিত প্রচেষ্টা।”
কমিশন আশা প্রকাশ করেছে, এই প্রোপাগান্ডা চালানো মহল দ্রুত ভুল স্বীকার করে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের এই বিস্তারিত ব্যয় বিবরণ প্রমাণ করে যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আর্থিক কার্যক্রম স্বচ্ছভাবে পরিচালিত হচ্ছে। সরকারের দাবি, এই তথ্যমূলক ব্যাখ্যার মাধ্যমে জনগণের বিভ্রান্তি দূর হবে এবং গুজবের অবসান ঘটবে।
