পরিবেশ রক্ষায় সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৬:১৫, ২ নভেম্বর ২০২৫
প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
প্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীর ওপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব না ফেলেই সড়ক, রেল, নৌ ও বিমান যোগাযোগব্যবস্থাকে সমন্বিতভাবে আধুনিকায়নের আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
রবিবার রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত `সেন্ট্রাল ইন্টিগ্রেটেড মাল্টিমোডাল ট্রান্সপোর্ট সেক্টর মাস্টার প্ল্যান অব বাংলাদেশ’–এর প্রান্তিক মূল্যায়ন ও কৌশলগত পরিকল্পনা বিষয়ক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান।
বৈঠকে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, বিশেষ সহকারী ড. শেখ মইনউদ্দিন ও ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, `আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনো বেশ বিশৃঙ্খল। একে দ্রুত শৃঙ্খলার আওতায় না আনলে তা অর্থনীতির জন্য গলার ফাঁসে পরিণত হবে।‘
তিনি জোর দিয়ে বলেন, উন্নয়ন হতে হবে পরিবেশের ক্ষতি না করে,`নদীর ওপর কোনো আঘাত করা যাবে না। পানিকে শান্ত রাখতে হবে, কারণ পানি আমাদের বিরাট সম্পদ।‘
সড়ক ও জনপথ বিভাগ বৈঠকে একটি প্রাথমিক কৌশলগত পরিকল্পনা উপস্থাপন করে, যাতে সড়ক, রেল, নৌ ও আকাশপথের সমন্বিত ব্যবহার নিশ্চিত করার নকশা তুলে ধরা হয়। প্রস্তাবে বলা হয়, দেশের বর্তমান রেল, নৌ ও সড়কপথের দক্ষ ব্যবহার ও সামান্য সম্প্রসারণের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ পরিবহনব্যবস্থায় বিপ্লব ঘটানো সম্ভব।
প্রধান উপদেষ্টা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর এই সমন্বিত উদ্যোগকে প্রশংসা করে বলেন,`এটি আমাদের জন্য একটি শক্ত ভিত্তি তৈরি করেছে। এখন এই পরিকল্পনাগুলোকে বাস্তবায়নের দিকে নিয়ে যেতে হবে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে।‘
প্রধান উপদেষ্টা বলেন,`অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ পরিকল্পনার পাশাপাশি আমাদের আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সংযোগের বিষয়েও সমান গুরুত্ব দিতে হবে। নদী আমাদের প্রাণ—এটা ভুললে চলবে না।‘
বিশেষ সহকারী ড. শেখ মইনউদ্দিন বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থায় `একটি সামষ্টিক মডেল’ গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চলছে, যাতে দেশের অর্থনৈতিক লাইফলাইন দৃঢ় হয়।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন,`যেসব স্থানে ছোট আকারের নতুন সড়ক নির্মাণের মাধ্যমে বৃহৎ অঞ্চল জাতীয় কানেক্টিভিটিতে যুক্ত হতে পারে, সেসব জায়গায় দ্রুত পরিকল্পনা প্রণয়ন জরুরি।‘ স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ জানান, এলজিইডি বিভাগের কাজগুলো আরও বৈজ্ঞানিকভাবে পরিচালনার জন্য একটি ‘প্ল্যানার্স উইং’ গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিডা চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী জানান, `২০৩০ সালের মধ্যে চট্টগ্রামে আরও তিনটি নতুন বন্দর চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। এসব বন্দরের সঙ্গে দ্রুত ও কার্যকর সড়কসংযোগ নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।‘
