ত্বকী হত্যা মামলার চার্জশিট শিগগিরই
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫:০১, ১ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ২১:৩১, ১ নভেম্বর ২০২৫
তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। ছবি : সংগৃহীত
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা মামলার তদন্ত শেষ হয়েছে। শিগগিরই আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করা হবে বলে জানিয়েছেন র্যাব-১১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।
শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মকর্তা বলেন, “ত্বকী হত্যা মামলার তদন্ত প্রায় সম্পন্ন। খুব শিগগিরই চার্জশিট আদালতে দাখিল করা হবে।”
এর আগে গত ১ অক্টোবর র্যাব-১১-এর মিডিয়া অফিসার সহকারী পুলিশ সুপার সনদ বড়ুয়া স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মামলার পলাতক আসামি আব্দুল্লাহ আল মামুনকে (৪০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকাসহ নারায়ণগঞ্জে প্রায় ২২ দিন অভিযান চালিয়ে আজমেরী ওসমানের গাড়িচালক মো. জামশেদসহ ছয়জন সহযোগীকে আটক করে র্যাব। এর মধ্যে আজমেরী ওসমানের সহযোগী কাজল হাওলাদার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
অন্য দুই আসামি শাফায়েত হোসেন (শিপন) ও মামুন মিয়াকে দুই দফায় ৯ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
গাড়িচালক জামশেদকে ৫ দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করলে কারাগারে পাঠানো হয়। আরেক আসামি ইয়ার মোহাম্মদ বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
২০১৩ সালের ৬ মার্চ বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের কালীরবাজারের বাসা থেকে নিখোঁজ হন ত্বকী। দুই দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনি খাল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
ত্বকী ছিলেন ‘এ’ লেভেল পরীক্ষায় রসায়ন ও পদার্থবিজ্ঞানে বিশ্বের সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া একজন মেধাবী শিক্ষার্থী।
ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি অভিযোগ করেছেন, “সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের নির্দেশে ত্বকীকে অপহরণ করা হয় এবং শামীমের ভাতিজা আজমেরী ওসমানের টর্চার সেলে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।”
রফিউর রাব্বির দাবি, হত্যার সঙ্গে জড়িত ১১ জনের তথ্য আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে উঠে এসেছে। তবে শামীম ওসমান পরিবারের নাম আসায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে মামলার তদন্ত স্থগিত করা হয়েছিল।
ত্বকীর বাবা বলেন, “গত ১২ বছরে সাড়ে ১১ বছর ছিল ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসন। এখন অন্তর্বর্তী সরকার এই হত্যার বিচার করতে চায়। তবে এই বিচারের জন্য প্রয়োজন একটি নির্ভুল অভিযোগপত্র।”
তিনি দাবি করেন, “নির্দেশদাতা শামীম ওসমান, তার ছেলে অয়ন ওসমান, শাহ নিজামসহ যাদের নাম এসেছে—তাদের সবাইকে অভিযোগপত্রে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।"
ত্বকী হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের অন্যতম আলোচিত রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। দীর্ঘ ১২ বছরেও বিচার না পাওয়ায় ‘ত্বকী হত্যার বিচার চাই’ আন্দোলন এখনো চলমান। র্যাবের সর্বশেষ আশ্বাসের পর নতুন করে মামলার অগ্রগতির আশা দেখছেন নিহতের পরিবার ও নাগরিক সমাজ।
