চিরনিদ্রায় অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমেদ
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪:১৬, ৯ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১৫:৫৮, ৯ অক্টোবর ২০২৫
স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রধান ও দেশবরেণ্য শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমেদ চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সকাল ১১টায় চট্টগ্রামের হাটহাজারীর ফতেহপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় অংশ নেন রাজনৈতিক নেতা, শিক্ষক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং অসংখ্য শিক্ষার্থী ও শুভানুধ্যায়ী।
এরপর ফতেহপুর মদনহাট এলাকার পারিবারিক কবরস্থানে মরহুমের দাফন সম্পন্ন হয়। সকাল ৮টার দিকে রাজধানী থেকে লাশবাহী গাড়ি ফতেহপুরে পৌঁছালে পুরো এলাকায় শোকের আবহ নেমে আসে।
স্বজনরা জানান, বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ৭১ বছর বয়সী এই বিশিষ্ট স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। চিকিৎসকেরা তার হার্টে রিং পরানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, কিন্তু তার আগেই তিনি না ফেরার দেশে চলে যান।
অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমেদ বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার কাঠামো, গণতান্ত্রিক বিকেন্দ্রীকরণ ও নির্বাচনী সংস্কারের ওপর গবেষণা ও নীতিনির্ধারণে অগ্রগণ্য ভূমিকা রেখেছেন। তিনি দীর্ঘদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন এবং স্থানীয় সরকার বিষয়ক একাধিক বই ও গবেষণাপত্রের লেখক।
তিনি স্থানীয় সরকার কমিশনের প্রধান হিসেবে দেশের প্রশাসনিক সংস্কারে গঠনমূলক প্রস্তাবনা প্রদান করেন, যা পরবর্তী নীতিমালা প্রণয়নে দিকনির্দেশনা হিসেবে বিবেচিত হয়। তাঁর গবেষণা কাজ প্রশাসন ও নাগরিক অংশগ্রহণের ক্ষেত্রকে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দিয়েছিল।
ড. তোফায়েল আহমেদের মৃত্যুতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, একাডেমিক মহল ও সুশীল সমাজের ব্যক্তিত্ব গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বিবৃতিতে বলেছেন, `ড. তোফায়েল আহমেদ ছিলেন গণতান্ত্রিক স্থানীয় শাসনের এক অকৃত্রিম অনুরাগী। তার প্রজ্ঞা ও বিশ্লেষণ বাংলাদেশের স্থানীয় প্রশাসনিক কাঠামোকে যুগোপযোগী করতে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে।‘
তার মৃত্যুতে দেশের শিক্ষা ও নীতিনির্ধারণ অঙ্গনে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তা সহজে পূরণ হওয়ার নয় বলে মন্তব্য করেন সহকর্মীরা।
