ঢাকা-আঙ্কারা বৈঠক
প্রতিরক্ষাসহ বহুখাতে সহযোগিতা জোরদারে ঐকমত্য
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯:৪৪, ৭ অক্টোবর ২০২৫
বাংলাদেশ ও তুরস্ক প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তাখাতে বিদ্যমান সহযোগিতা নিয়ে গভীর সন্তোষ প্রকাশ করেছে। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দুই দেশই শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন লক্ষ্য করে সম্পর্ক আরও সম্প্রসারণের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে।
বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম এবং তুরস্কের পক্ষে নেতৃত্ব দেন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ. বরিস একিঞ্চি। আলোচনায় প্রতিরক্ষা শিল্প, সামরিক প্রশিক্ষণ, ক্রয় ও সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ বিদ্যমান সহযোগিতা পর্যালোচনা করে উভয় দেশই সন্তোষ প্রকাশ করে।
বৈঠকে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তর ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগে অব্যাহত সমর্থনের আশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করেন তুরস্কের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার আইনের শাসন ও মানবাধিকারের যে সংস্কার কার্যক্রম চালাচ্ছে, তা আঙ্কারা প্রশংসার চোখে দেখে।
উভয় দেশ বাণিজ্য বহুমুখীকরণ, বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও যোগাযোগ উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে। যত দ্রুত সম্ভব পরবর্তী যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের অধিবেশন আহ্বানের বিষয়ে সম্মত হয় তারা। বৈঠকে বাংলাদেশ তুরস্কের বিনিয়োগকারীদের দেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের আহ্বান জানায়।
জ্বালানিখাতে তুরস্কের প্রযুক্তিগত অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর আগ্রহ প্রকাশ করে বাংলাদেশ। উভয় দেশ গ্রিন টেকনোলজি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়নে যৌথ উদ্যোগে কাজ করার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করে।
শিক্ষা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও সংস্কৃতি বিনিময়ে সন্তোষ প্রকাশ করে দুই দেশ। কারিগরি প্রশিক্ষণ, গবেষণা, তথ্যপ্রযুক্তি, যুব ও ক্রীড়া উন্নয়ন এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে সম্পর্ক দৃঢ় করার বিষয়ে ঐকমত্য হয়।
রোহিঙ্গা সংকটে তুরস্কের রাজনৈতিক ও মানবিক সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বাংলাদেশ। বৈঠকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত নৃশংসতার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং তাদের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম তুরস্কের স্বাস্থ্যখাতে সহযোগিতা, বিশেষ করে জুলাই বিপ্লবের আহতদের চিকিৎসা ও কক্সবাজারে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের সেবার জন্য ধন্যবাদ জানান।
সবশেষে উভয় দেশ সুবিধাজনক সময়ে পরবর্তী বৈঠক তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় আয়োজনের বিষয়ে একমত হয়। দুই পক্ষই আশা প্রকাশ করে যে, এই সংলাপ দুই দেশের ক্রমবর্ধমান অংশীদারত্বকে আরও সুদৃঢ় করবে।
