প্রতিবন্ধীদের ঘরে বসে ভোটের প্রস্তাব ‘যুক্তিসংগত ও যুগান্তকারী’
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯:২১, ৭ অক্টোবর ২০২৫
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন, প্রতিবন্ধী ভোটারদের ঘরে বসে ভোট দেওয়ার প্রস্তাবটি যুগান্তকারী ও যুক্তিসংগত। এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে সমাজের বড় একটি অংশ সহজেই তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সম্মেলনকক্ষে নারী প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে অন্য চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সানাউল্লাহ বলেন, “প্রতিবন্ধীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা শুধু মানবিক দায়িত্ব নয়, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্তিমূলকতার প্রতীকও বটে। ঘরে বসে ভোটের সুযোগ তাদের ভোটদানে অংশগ্রহণের পরিধি আরও প্রসারিত করবে।”
নারী প্রতিনিধিত্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যদি ২০৩০ সালের পরও ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে না পারে, তাহলে আর সময়সীমা বাড়ানো হবে না। তাঁর মতে, এ বিষয়ে কঠোর নীতি প্রয়োগ করলে রাজনৈতিক দলগুলো আরও সচেতন হবে।
তিনি প্রস্তাব করেন, “নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে ব্যর্থ দলগুলোর পুনঃনিবন্ধনের বিষয়টি নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনায় অন্তর্ভুক্ত করা হলে বাস্তব পরিবর্তন ঘটবে।”
প্রবাসী ভোট প্রসঙ্গে ইসি সানাউল্লাহ বলেন, যদিও প্রবাসী ভোটারের সংখ্যা বেশি নয়, তবে প্রক্রিয়াটি শুরু হওয়াটাই গুরুত্বপূর্ণ। এটি দেশের বাইরে থাকা নাগরিকদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্তির প্রথম ধাপ।
পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রসঙ্গে তিনি জানান, অনেক সংস্থা যোগ্য হলেও অতীতে তারা কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা রাখতে পারেনি। তাই এবারের নির্বাচনে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা যায়নি। ইসির সীমাবদ্ধতাও আগের তিনটি নির্বাচন থেকেই প্রকাশিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
গুজব, ডিসইনফরমেশন ও মিসইনফরমেশন মোকাবিলায় ইসি কীভাবে কাজ করবে—এ প্রশ্নে তিনি বলেন, “গুজবের অন্তত অর্ধেক সোর্স ট্রেস করা যায় না। অনেক সোর্স দেশের বাইরেও থাকে, যাদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব নয়। তবে ইসি তথ্যপ্রবাহে লাগাম টানবে না। বরং সঠিক তথ্য দিয়ে অপতথ্য প্রতিহত করা হবে।”
তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, “রোমানিয়ার মতো দেশও অপতথ্য ঠেকাতে পারেনি, যার প্রভাব তাদের পুরো নির্বাচনে পড়েছিল।” এআই-সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জের বিষয়ে সানাউল্লাহ স্বীকার করেন, “বিশ্বের কোনো কমিশনই এখন পর্যন্ত এই প্রযুক্তিগত জটিলতার মোকাবিলায় ‘আপ টু দ্য মার্ক’ হতে পারেনি। ইসিকেও সীমাবদ্ধতা নিয়েই কাজ করতে হচ্ছে।”
