রোববার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫

| ২৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

এআই সৃষ্ট সাহিত্য বনাম মানবসৃষ্ট সাহিত্য

শিল্প-সাহিত্য ডেস্ক 

প্রকাশ: ১৩:২১, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

এআই সৃষ্ট সাহিত্য বনাম মানবসৃষ্ট সাহিত্য

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) যখন দ্রুত লেখালেখির জগৎ দখল করে ফেলছে, তখন সাহিত্য অঙ্গনে তৈরি হচ্ছে নতুন ধরনের উদ্বেগ ও বিতর্ক। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে—ভবিষ্যতে সাহিত্য বাজারে নাকি তৈরি হতে পারে দুই স্তরের আলাদা শ্রেণি। একদিকে মানবলেখা বই, যা হবে মূল্যবান ও ব্যয়বহুল; অন্যদিকে এআই-সৃষ্ট বই, যা পাওয়া যাবে কম দামে বা একেবারে বিনামূল্যে।

এআই কি সত্যিই মানুষের মতো লিখতে পারে?

বিতর্কটি শুরু একটি বাক্যকে কেন্দ্র করে—
“On the morning the truth began to unstitch itself, Leonard felt a faint, traitorous thrill…”
শুনলে মনে হবে এটি ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক ইয়ান ম্যাকইউয়ানের নতুন কোনো উপন্যাসের সূচনা। অথচ, এটি লিখেছে একটি সাধারণ এআই টুল—শুধু লেখকের শৈলী অনুকরণ করে। ভাষা, অলঙ্কার, গঠন—সবই এত নিখুঁত যে সাধারণ পাঠক পার্থক্য বুঝতেই পারবেন না।

 
গবেষণার নেতৃত্বদানকারী কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের  অধ্যাপক ড. ক্লিমেন্টাইন কোলেট সতর্ক করেছেন,ভবিষ্যতে মানবলেখা বই বিলাসী পণ্যে পরিণত হতে পারে। সাধারণ পাঠকের নাগালের বাইরে চলে যেতে পারে সৃজনশীল সাহিত্য।এআই-নির্ভর সস্তা বই বাজার দখল করে নিলে লেখকদের পেশাই হুমকিতে পড়বে।

যুক্তরাজ্যের পেশাদার লেখকদের অর্ধেকেরও বেশি মনে করেন—একসময় এআই তাদের কাজ প্রতিস্থাপন করতে পারে।

এআই কি পাঠকের রুচি বদলে দিচ্ছে?নন-ফিকশন ঘরানায় ইতিমধ্যেই অনেক পাঠক এআই-লেখা বইয়ের দিকে ঝুঁকছেন।
কারণ—তথ্যভিত্তিক বিষয়, দ্রুত সারাংশ তৈরি, কম সময়ে বেশি লেখা।

কিন্তু সাহিত্য বিশ্লেষকদের মতে, মানবিক অনুভূতি, অভিজ্ঞতা, আবেগ ও সৃজনশীলতার গভীরতা প্রযুক্তি কখনোই সম্পূর্ণরূপে পুনরুত্পাদন করতে পারবে না।

রোম্যান্স, থ্রিলার, ক্রাইম—এআইয়ের সহজ শিকার হয়ে পড়ছে। এই ঘরানাগুলোতে কাঠামো পুনরাবৃত্তিমূলক হওয়ায় এআই এগুলো অনুকরণ করতে পারছে খুব সহজেই।
বিশাল বাজার, প্রচুর চাহিদা ও দ্রুত লেখা তৈরি। 
ফলে ভবিষ্যতে প্রকাশনা শিল্প আরও বেশি এআই-নির্ভর হয়ে পড়তে পারে—এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

মার্ভেল ২০২৩ সালে এআই অ্যানিমেশন ব্যবহার করে সমালোচনার মুখে পড়েছিল।দুই বছর পর দৃশ্যপট বদলেছে—বিতর্ক কমেছে।নেটফ্লিক্স সিরিজে বিল্ডিং ধ্বংসের দৃশ্য এআই দিয়ে তৈরি—আলোচনা হলেও হইচই নেই।এআই তাই ক্রমেই ‘স্বাভাবিক প্রযুক্তি’ হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে।

ব্রিটিশ তরুণ লেখক টোবি কোভেন্ট্রির মতে, 
“মানবিক সৃজনশীলতা কখনও নিঃশেষ হবে না। পাঠক সবসময় জানতে চাইবে—গল্পটির পেছনে কে, কোন অনুভূতি, কোন জীবনানুভব লুকিয়ে আছে।”

অর্থাৎ মানবসৃষ্ট সাহিত্য এখনও তার স্বাতন্ত্র্য ধরে রাখবে বলেই তাঁর বিশ্বাস।

যুক্তরাজ্যের ২০২২ সালের এক জরিপে দেখা গেছে, প্রতি পাঁচজন শিশুর একজনের কাছে নিজের কোনো বই নেই।

যদি মানবসৃষ্ট বই ভবিষ্যতে শুধু ধনীদের নাগালে থাকে, তবে সাংস্কৃতিক বৈষম্য ভয়াবহ আকার নিতে পারে।

ড. কোলেট তাই সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন, এআই ব্যবহারের সুনির্দিষ্ট নীতি, কপিরাইট ও নৈতিকতা বজায় রেখে নিয়ন্ত্রণ ও লেখকদের সুরক্ষা
না হলে সাহিত্য জগতে নেমে আসতে পারে গভীর সংকট।

আরও পড়ুন

শীর্ষ সংবাদ:

আজ নোয়াখালী মুক্ত দিবস
শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
শেখ হাসিনাসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি শুরু
বিটিআরসির সামনে মোবাইল ব্যবসায়ীদের সড়ক অবরোধ
‘মিনেসোটা প্রোটোকল’ মেনে শুরু জুলাই শহীদদের শনাক্তকরণ
বইয়ের জ্ঞান খেলাপিদের কাছে হার মানল: উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন
এভারকেয়ারে জোবাইদা, চলছে মেডিকেল বোর্ডের সভা
স্কুলিং মডেল বাতিলের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ শিক্ষার্থীদের
বাংলাদেশের সঙ্গে স্থিতিশীল সম্পর্ক চায় ভারত: প্রণয় ভার্মা
নির্বাচনে ৮৯% সাংবাদিক নিরাপত্তা ঝুঁকির আশঙ্কায়: জরিপ
১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত মেডিকেল কোচিং সেন্টার বন্ধ
৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ : বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয় ভারত ও ভুটান
জুলাই আন্দোলনের অজ্ঞাত ১১৪ শহীদের পরিচয় শনাক্তে সিআইডির উদ্যোগ
জানুয়ারির শুরুতেই শিক্ষার্থীরা বই পাবে: প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা
সেন্টমার্টিন থেকে ১৮৫০ কেজি বর্জ্য অপসারণ করল কেওক্রাডং
বিএনপি ‘প্রতিশ্রুতির রাজনীতিতে’ বিশ্বাসী: রিজভী
খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত
সিএমপির সব থানার ওসি রদবদল
যে কারণে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করতে পেরেছি
৬৪ জেলায় ৬৪ বন্যপ্রাণী কর্মীকে স্বীকৃতি দেবে সরকার