ব্যথা কমাতে বিশেষজ্ঞদের ৭ পরামর্শ
জীবনযাপন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬:৪৫, ২৬ নভেম্বর ২০২৫
শীত এসে পড়লেই অনেকের হাঁটু, গোড়ালি, কনুই কিংবা কব্জির পুরোনো ব্যথা চাগাড় দিয়ে ওঠে। সিঁড়ি দিয়ে উঠতে গেলে টনটন ব্যথা, হাঁটাচলায় অস্বস্তি—সব মিলিয়ে দৈনন্দিন কাজে বিঘ্ন ঘটে। চিকিৎসকদের মতে, তাপমাত্রা কমার সঙ্গে শরীরের অস্থিসন্ধিতে রক্তসঞ্চালন কিছুটা ধীর হয়, পেশি আড়ষ্ট হয় এবং স্নায়ু সংবেদনশীলতা বাড়ে। ফলে ব্যথা-বেদনা বেড়ে যেতে পারে। তবে বাড়তি একটু সচেতনতা আপনার হাঁটা-চলা ফিরিয়ে আনতে পারে আগের মতোই সাবলীল করে।
দিল্লি এমস-প্রশিক্ষিত রিউমাটোলজি বিশেষজ্ঞ ডা. বিষ্ণু কোনোুরু জানিয়েছেন, শীতকালে যাদের গাঁটের ব্যথার সমস্যা বাড়ে, তারা কিছু নিয়ম মেনে চললে ব্যথাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
১) পোশাকে গরম সুরক্ষা নিশ্চিত করুন
ঠান্ডায় হাত-পা আড়ষ্ট হয়ে গেলে ব্যথা বাড়ে। তাই গরম পোশাক, বিশেষত হাঁটু ও পায়ের অংশ ঢেকে রাখে এমন প্যান্ট বা মোজা পরা জরুরি। শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখাই প্রথম লক্ষ্য।
২) ঈষদুষ্ণ পানি দিয়ে গোসল করুন
বাত, আর্থ্রাইটিস বা গাঁটের ব্যথায় ভুগলে কখনও ঠান্ডা পানি ব্যবহার না করাই ভালো। ঈষদুষ্ণ পানি পেশি শিথিল করে এবং অস্থিসন্ধির ব্যথা কমায়। স্নান থেকে হাত-মুখ ধোয়া—সব ক্ষেত্রেই গরম পানি ব্যবহার করুন।
৩) নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করুন
শীতে সাধারণত শরীর অলস হয়ে পড়ে। এতে ব্যথা বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই প্রতিদিন সকালে কিছুক্ষণের জন্য হালকা শরীরচর্চা—হাঁটাহাঁটি, স্ট্রেচিং, যোগব্যায়াম বা সাইক্লিং করুন। সাঁতার জানা থাকলে গরম পানিতে সাঁতারও উপকারী হতে পারে। তবে ভারী ব্যায়াম এড়িয়ে চলুন।
৪) ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন
অতিরিক্ত ওজনের চাপ সোজা গিয়ে পড়ে হাঁটু ও গোড়ালিতে। তাই ব্যথা কমাতে ওজন নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত জরুরি। অস্বাস্থ্যকর খাবার কমিয়ে পুষ্টিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী খাদ্যতালিকা অনুসরণ করলে উপকার পাওয়া যায়।
৫) পর্যাপ্ত পানি পান করুন
শীতে খাওয়ার কম খাওয়ার প্রবণতা থাকে, কিন্তু অস্থিসন্ধি সুস্থ রাখতে শরীরে পর্যাপ্ত পানি জরুরি। জল অস্থিসন্ধির পিচ্ছিলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে, ঘর্ষণ কমায় এবং ব্যথা কমায়।
৬) সঠিক জুতো ব্যবহার করুন
যাদের পায়ের ব্যথা রয়েছে, তাদের হাঁটার সময় পায়ের পেশিকে যথাযথ সাপোর্ট দেয় এমন আরামদায়ক জুতো বেছে নিতে হবে। জুতোর মাপ ঠিক না হলে ব্যথা বাড়তে পারে।
৭) খাবারে প্রদাহনাশক উপাদান রাখুন
হলুদ, আদা, গোলমরিচযুক্ত দুধ প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি ভিটামিন ডি, ক্যালশিয়াম ও ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার নিয়মিত খাওয়া উচিত। প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং ইউরিক অ্যাসিড বাড়ায় এমন খাবার থেকে দূরে থাকা দরকার।
