প্রতিদিন ২-৩টি সেদ্ধ ডিমে কি সত্যিই মেধা বাড়ে? 

দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় ডিম অন্যতম পরিচিত ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্য। কিন্তু এই ডিমেরও এমন কিছু গুণ রয়েছে, যেগুলো সম্পর্কে সচরাচর খুব বেশি আলোচনা হয় না। মূলত চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদদের মতে—সন্তানের জন্মের আগেই তার মেধা বিকাশে প্রভাব ফেলতে পারে ডিম। আবার প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রেও স্মরণশক্তি ও ব্রেইন-ফাংশন উন্নত করতে সাহায্য করে নিয়মিত সেদ্ধ ডিম।

ভারতের দিল্লিভিত্তিক পুষ্টিবিদ ভবেশ গুপ্ত জানাচ্ছেন, ডিমে ভিটামিন সি বাদে প্রায় সব ধরনের ভিটামিন, প্রয়োজনীয় খনিজ, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস আছে। তার মতে, অপুষ্টিজনিত সমস্যা থাকা ব্যক্তিদের নিয়মিত ডিম খাওয়ালে শরীরের বেশিরভাগ পুষ্টিহীনতা দূর হতে দেখা যায়।

অন্যদিকে দিল্লির গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট ডা. শুভম বৎস মনে করেন, প্রতিদিন ২–৩টি সেদ্ধ ডিম গোটা (সাদা–কুসুমসহ) খাওয়া নিরাপদ এবং শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তাঁর ব্যাখ্যা—ডিম খেলে কোলেস্টেরল বাড়ে, এই ধারণা এখন ভুল প্রমাণিত। বরং ডিমের কোলিন, লুটিন ও জেক্সানথিন নামের কিছু উপাদান শরীর ও মস্তিষ্কের দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষায় কাজ করে।

নিয়মিত ২–৩টি সেদ্ধ ডিম খেলে যেসব উপকার পাবেন

১) ওজন কমাতে সহায়ক
ডা. বৎস জানান, তিনি নিজেই ডিম-ভিত্তিক ব্রেকফাস্ট রুটিন মেনে ২৫ কেজি ওজন কমিয়েছেন।
একটি সেদ্ধ ডিমে থাকে—৭৮ কিলোক্যালোরি,৬ গ্রাম প্রোটিন,৫ গ্রাম স্বাস্থ্যকর ফ্যাট,০.৬ গ্রাম কার্বোহাইড্রেটএর ফলে পেট বেশি সময় ভরা থাকে, অপ্রয়োজনীয় ক্ষুধা কমে।

২) মেধা ও স্মরণশক্তি বৃদ্ধি
ডিমে থাকা কোলিন মস্তিষ্কের কোষ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের নিয়মিত ২টি ডিম খেলে সন্তানের মস্তিষ্কের বিকাশে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।

প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রেও মনোযোগ, স্মরণশক্তি ও ব্রেইন-ফাংশন উন্নত হতে পারে।

৩) লিভার ভালো রাখে
ডিমের অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট লুটিন ও জেক্সানথিন লিভারকে পরিষ্কার রাখে এবং টক্সিন দূর করতে সহায়তা করে।
ফ্যাটি লিভার কমাতেও সেদ্ধ ডিম কার্যকর।

৪) চোখের স্বাস্থ্য উন্নত করে
ডিমের লুটিন ও জেক্সানথিন চোখে ক্যাটারাক্ট জমা প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।
এছাড়া—ভিটামিন এ রেটিনার স্বাস্থ্য রক্ষা করে
নীল আলো (ব্লু লাইট) থেকে চোখের সুরক্ষা বৃদ্ধি পায়