যে কারণে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করতে পেরেছি
ব্যারিস্টার আমীর-উল-ইসলাম
প্রকাশ: ১৬:২৮, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১৭:৩৪, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫
ব্যারিস্টার আমীর-উল-ইসলাম। গ্রাফিক্স : সমাজকাল
আমাদের সমাজটা এমন হয়ে গেছে, আমরা এমন একটা রাজনীতির ভেতরে পড়ে গেছি যেখানে শুধু ক্ষমতার বিষয়টাই প্রাধান্য পাচ্ছে।কিন্তু মানবিক মানুষের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এই জায়গাটাতে বড় ঘাটতি রয়েছে আমাদের। এই ঘাটতি যদি অতি শিগগিরই পূরণে উদ্যোগ গ্রহণ করা না হয় তাহলে যত উন্নয়ন হয়েছে; আমাদের তাতে ধস নামবে, যা কারও কাঙ্ক্ষিত নয়, হতে পারে না।
শহীদদের রক্তে অর্জিত বাংলাদেশে—হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, মুসলিম, বিভিন্ন উপজাতি, বাঙালি-নন বাঙালি, এমনকি অন্য দেশ থেকেও যারা এখানে আসছে, তাদের ঠাঁই দিচ্ছি আমরা। এটা আমাদের মানবতাবোধ, মানবিকতার পরিচয়। মানবতাবোধের এই জায়গাটা অক্ষুণ্ন রাখতে হলে রাজনীতিটাকে মানবিক রাজনীতিতে নিয়ে যেতে হবে।
অনিয়ম-দুর্নীতি, সন্ত্রাস, অপরাধ-অপকর্মগুলো যারা করছে, রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরা নিজেরা মারামারি করছে, খুনখারাবি করছে, ভীতিকর একটা সামাজিক দৈন্য আমাদের রাজনীতিতে বিস্তার করছে। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, সব কিছুকে পণ্যে রূপান্তরিত করা যায় না। আর রাজনীতি পণ্যে রূপান্তরিত করা হোক, সেটা কখনোই আওয়ামী লীগের রাজনীতি হতে পারে না। কিন্তু সেই জায়গা থেকে আমরা সরে এসেছি।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, তার প্রদর্শিত পথ, তিনি যে দল সৃষ্টি করেছিলেন, দলে যেভাবে ত্যাগী মানুষদের সৃষ্টি করেছিলেন, মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে দেশের প্রতিটি জেলায় যেসব নেতা ছিলেন, তাদের সঙ্গে যে কর্মীরা কাজ করেছিলেন, যুদ্ধ করেছিলেন তাদের যে ত্যাগ, সততা-স্বচ্ছতা সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি থাকা, এলাকার মানুষের শ্রদ্ধা অর্জনের জন্য যা কিছু প্রয়োজন সবকিছুই তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিল। সে কারণেই আমরা মুক্তিযুদ্ধটা করতে পেরেছিলাম। দলমত-নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করা গিয়েছিল তখন। সেই জায়গাটিতে ফিরে যেতে হবে আমাদের। বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে আমাদের চলতে হবে। শিক্ষা, সংস্কৃতি, রাজনীতি ও জীবনাচারণ সবকিছু একটি কক্ষে নিয়ে আসতে হবে, যে কক্ষে দৃশ্যমান হবে মানবিকতার বিকাশ।
পরিচিতি: সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা।
