কী স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ, সেই দলিল বাহাত্তরের সংবিধান
ড. কামাল হোসেন
প্রকাশ: ১৯:৩২, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১৯:৩৭, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫
ড. কামাল হোসেন। গ্রাফিকস: সমাজকাল
অসহযোগ আন্দোলন থেকেই আমাদের মুক্তির সংগ্রাম শুরু হয়েছিল। সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে পাকিস্তান সরকারকে পুরো অচল করে দিয়েছিল। জনতার সেই শক্তি নিয়েই আমরা স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলাম। ৯ মাসে ঐতিহাসিক বিজয় অর্জন করেছিলাম। আমরা ঐক্যবদ্ধ ছিলাম সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে, দাবি ছিল ন্যায়সঙ্গত, এর ফলেই অসম্ভবকে সম্ভব করতে পেরেছিলাম আমরা।
শহর ও গ্রাম বলে কিছু ছিল না। সব জায়গায়ই উল্লেখযোগ্য মানুষ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল। যে যেভাবে পেরেছে অবদান রাখার চেষ্টা করেছে মুক্তিসংগ্রামে। পশ্চিমারা তখন বলেছিল, এসব শহরভিত্তিক কথা, দাবি-দাওয়া। ছয় দফা, এগারো দফা ও স্বায়ত্তশাসন গ্রামবাংলায় সাড়া পাবে না। তাদের এই ধারণা যে কতটা ভুল ছিল, তা প্রমাণিত হয়েছিল। প্রতিটি গ্রামই তো মুক্তিসংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছিল। কোটিরও বেশি মানুষ আহত হয়েছিল। শহীদ হয়েছিল ৩০ লাখ মানুষ। লাখো মা-বোন হারিয়েছিলেন সম্ভ্রম।
কী স্বপ্ন নিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম সেই চিত্র তো সংবিধানে তুলে ধরা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী অন্যান্য নেতৃবৃন্দ স্বাক্ষর করে এই দলিলটা রেখে গেছেন আমাদের বাহাত্তরের সংবিধান, সেখানে স্পষ্ট করে লেখা রয়েছে, কী ধরনের রাষ্ট্রব্যবস্থা আমাদের স্বপ্নের মধ্যে ছিল। গণতন্ত্র। জনগণ হবে ক্ষমতার মালিক। তাদের প্রতিনিধিদের সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত করে সকল স্তরে ক্ষমতার প্রয়োগ করবেন তারাই।
আমাদের মৌলিক অধিকারগুলো কী, সংবিধানে তা ভেঙে ভেঙে লেখা রয়েছে। জানমালের নিরাপত্তা, বাকস্বাধীনতা, সভা-সমিতি করার স্বাধীনতা ইত্যাদি। এসব ব্যাপারে কেউ হস্তক্ষেপ করলে আদালতের আশ্রয় নেওয়া যাবে।
পরিচিতি: সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ও আইনজীবী
