ফাঁসলেন বিটিআরসির সাবেক দুই চেয়ারম্যানসহ ৬ জন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০:৪৭, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। গ্রাফিক্স : সমাজকাল
আন্তর্জাতিক ইনকামিং কলের টার্মিনেশন রেট ও রেভিনিউ শেয়ার বেআইনিভাবে কমিয়ে রাষ্ট্রের প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি করার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিটিআরসির সাবেক দুই চেয়ারম্যান, সাবেক কমিশনার মো. জহুরুল হকসহ ছয়জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।
দুদকের ইতিহাসে এই প্রথম কমিশনার পর্যায়ের কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা হলো। অভিযুক্তদের মধ্যে আছেন সংস্থাটির সাবেক কমিশনার মো. জহুরুল হক, যিনি পরবর্তী সময়ে বিটিআরসির চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির পরিচালক জালাল উদ্দীন আহমেদ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম।
মামলার আসামিরা হলেন– বিটিআরসির সাবেক চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান, সাবেক চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ, সাবেক কমিশনার মো. জহুরুল হক, সাবেক কমিশনার মো. রেজাউল কাদের ও মো. আমিনুল হাসান।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৮ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ের মধ্যে বিটিআরসি কর্তৃপক্ষ সরকারের অনুমোদন ছাড়াই পরীক্ষামূলক সময়ের কল রেট কমিয়ে ০.০৩ ডলার থেকে ০.০১৫ ডলার করে এবং সরকারের রেভিনিউ শেয়ার ৫১.৭৫ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশে নামিয়ে আনে। একইসঙ্গে আইজিডব্লিউ অপারেটরের শেয়ার ১৩.২৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ করা হয়। যা সম্পূর্ণ বেআইনি।
যার মাধ্যমে রেভিনিউ শেয়ার কমানোর ক্ষতি ৩৮৩ কোটি ৭৩ লাখ ৮৩ হাজার টাকা, কম রেটে কল আনায় ক্ষতি ২ হাজার ৯৪১ কোটি ৯৯ লাখ ৩৯ হাজার কোটি টাকা এবং বৈদেশিক মুদ্রা না আনায় ক্ষতি ৫ হাজার ৬৮৫ কোটি ১ লাখ কোটি টাকা। সবমিলিয়ে রাষ্ট্রের মোট ক্ষতি ৯ হাজার ১০ কোটি ৭৪ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ৪০৯/৪১৮, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ক্ষমতার অপব্যবহারসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক কমিশনার মো. জহুরুল হকের বিরুদ্ধে পৃথক অনুসন্ধান চলমান রয়েছে বলে জানা গেছে। ২০২১ সালের ১০ মার্চ কমিশনার হিসেবে মো. জহুরুল হক দুর্নীতি দমন কমিশনে যোগদান করেন। ২০২৪ সালের ৩০ অক্টোবর পদত্যাগ করেন। ওইদিন দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ ও কমিশনার আছিয়া খাতুনও পদত্যাগ করেন।
