অরিত্রীর আত্মহত্যা মামলার প্রতিবেদন দাখিলের নতুন তারিখ ৮ জানুয়ারি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০:৩৯, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকারী। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর বেইলি রোডের ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলায় পুনঃতদন্ত প্রতিবেদনের জন্য নতুন তারিখ নির্ধারণ করেছে আদালত। আগামী ৮ জানুয়ারি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্ত কর্মকর্তাকে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) নির্ধারিত দিনে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে না পারায় ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম জশিতা ইসলাম নতুন তারিখ দেন।
২০১৮ সালে ৩ ডিসেম্বর শান্তিনগরের বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রী (১৫)। তার আগের দিন পরীক্ষায় নকল করার অভিযোগে তাকে পরীক্ষা হল থেকে বের করে দিয়েছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ। অরিত্রীর সামনে তার বাবা-মাকে স্কুলে ডেকে ‘অপমানের’ পাশাপাশি তাকে স্কুল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়। এরপরই আত্মহত্যা করেন অরিত্রী।
পরদিন ৪ ডিসেম্বর তার বাবা দিলীপ অধিকারী আত্মহননে প্ররোচনার অভিযোগ এনে মামলা করেন। অরিত্রীর সহপাঠীরাও বিক্ষোভ করেন। মামলার পর অরিত্রীর শিক্ষকদের পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও পরে তারা জামিন পান।
এজাহারে অভিযোগ করা হয়, স্কুল কর্তৃপক্ষ মেয়ের সামনে তাদের অপমান করে। ওই অপমান এবং পরীক্ষা দিতে না পারার মানসিক আঘাত সইতে না পেরে অরিত্রী আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
সেই ঘটনার তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের তখনকার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস এবং শাখা প্রধান জিনাত আক্তারকে আসামি করে মামলার অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক কামরুল হাসান তালুকদার।
সেখানে বলা হয়, আসামিদের ‘নির্দয় ব্যবহার ও অশিক্ষকসুলভ আচরণ’ অরিত্রী অধিকারীকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করে।
মামলার এজাহারে অরিত্রীর শ্রেণি শিক্ষক হাসনা হেনাও আসামি ছিলেন। তবে অভিযোগপত্রে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এরপর ২০১৯ সালের ১০ জুলাই অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে নাজনীন ফেরদৌস ও জিনাত আক্তারের বিচার শুরু করে আদালত।
মামলার ১৮ সাক্ষীর মধ্যে ১৫ জনের সাক্ষ্য নেন ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রবিউল আলম।
অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারী, মা বিউটি অধিকারী, অরিত্রীদের বাড়ির নৈশ প্রহরী শুকদেব, অরিত্রীর বাবার সহকর্মী সনজয় অধিকারী, প্রতিবেশী মেরিনা মণ্ডল সাক্ষ্য দিয়েছেন এ মামলায়।
পরে মামলাটি ২০২৩ মালের ২৭ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের জন্য ২০২৪ সালের ২১ জানুয়ারি দিন ধার্য করে। ওইদিন রায় প্রস্তুত না হওয়ায় রায় পিছিয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি তারিখ রাখে আদালত। কিন্তু ওইদিনও রায় প্রস্তুত না হওয়ায় তা পিছিয়ে ৩ মার্চ যায়। একই কারণে রায় পিছিয়ে ৯ এপ্রিল দিন ধার্য করে আদালত। আর ৯ এপ্রিল পিছিয়ে ৩ মে রায়ের জন্য দিন রাখা হয়। পরে তা পিছিয়ে ২৫ জুলাই ঠিক করা হয়।
শেষ পর্যন্ত গত ২৫ জুলাই রায় ঘোষণার দিনে ঢাকার দ্বাদশ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আব্দুল্লাহ আল মামুন ‘তদন্ত কর্মকর্তার গাফিলতি’ পাওয়ার কথা তুলে ধরে পুলিশ ব্যুরো অভ ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) মামলাটি পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেন।
