বেনজীরের সম্পদের খোঁজে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও যুক্তরাজ্যের সহায়তা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২২:২৮, ১০ নভেম্বর ২০২৫
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) / ফাইল ছবি
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের বিদেশি সম্পদের তথ্য যাচাইয়ে তিনটি দেশের সহায়তা চেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও যুক্তরাজ্যে তার নামে বা পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ এবং ব্যবসায়িক বিনিয়োগের তথ্য সংগ্রহের জন্য পারস্পরিক আইনি সহায়তার (MLA) আবেদন পাঠানো হয়েছে।
দুদকের সহকারী পরিচালক তানজির আহমেদ সোমবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
১১ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগ
দুদকের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বেনজীর আহমেদ বৈধ আয় উৎসের বাইরে ১১ কোটি ৪ লাখ ৪৩ হাজার ৫৭৬ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। এর মধ্যে স্থাবর সম্পদ ৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা এবং অস্থাবর সম্পদ ৮ কোটি ১২ লাখ টাকারও বেশি।
কমিশনের নোটিশে সম্পদ বিবরণী দাখিলের সময় তিনি যে ৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকার স্থাবর সম্পদের কথা উল্লেখ করেছিলেন, তদন্তে তার সঙ্গে আরও বাড়তি সম্পদের প্রমাণ মেলে। এ ছাড়া, তার কন্যা যাহরা যারীন বিনতে বেনজীরের নামে রাখা সম্পদ গোপন করার প্রমাণও পেয়েছে দুদক।
মামলা ও চার্জশিট অনুমোদন
গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা দায়ের করে দুদক।
তদন্ত শেষে সম্প্রতি ১১ কোটি টাকার সম্পদের চার্জশিট অনুমোদন করেছে কমিশন। দুদক সূত্রে জানা গেছে, শিগগিরই অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হবে।
তদন্তে আরও জানা গেছে, বেনজীর তার অপরাধলব্ধ অর্থ বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব, ব্যবসা ও যৌথ মূলধনী প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করে উৎস গোপন করেছেন।
এতে দুদক আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা অনুযায়ী অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।
বেনজীর আহমেদ ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শকের দায়িত্ব পালন করেন।
এর আগে তিনি র্যাবের মহাপরিচালক এবং ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার হিসেবেও দায়িত্বে ছিলেন।
ক্ষমতার পরিবর্তনের পর থেকেই তার বিরুদ্ধে বিদেশে বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠতে থাকে। একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমেও তার বিদেশি বিনিয়োগ ও লাক্সারি সম্পত্তির তথ্য প্রকাশিত হয়।
দুদক বলছে, বেনজীর আহমেদের মালিকানাধীন সম্পদের বড় অংশ বিদেশে রয়েছে বলে প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছে। এ কারণে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ছাড়া সম্পদের প্রকৃত উৎস ও মালিকানা নির্ধারণ সম্ভব নয়।
এমএলআর আবেদনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও যুক্তরাজ্যের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কাছ থেকে ব্যাংক হিসাব, বিনিয়োগ ও সম্পত্তির মালিকানা সংক্রান্ত তথ্য চাওয়া হয়েছে।
