বব মার্লের সহযোদ্ধা জিমি ক্লিফ মারা গেছেন
বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮:২৫, ২৬ নভেম্বর ২০২৫
বব মার্লের সহযোদ্ধা কিংবদন্তি শিল্পী জিমি ক্লিফ আর নেই। ছবি: সংগৃহীত
রেগে, স্কা ও রকস্টেডি—এই তিন ধারাকে আন্তর্জাতিক সংগীত মানচিত্রে ছড়িয়ে দিতে বব মার্লের সঙ্গে যারা পথ দেখিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন জিমি ক্লিফ। বিশ্বের সংগীতপ্রেমীরা যার কণ্ঠে খুঁজে পেতেন জ্যামাইকান আত্মার শক্তি, প্রতিবাদের সুর আর জীবনযুদ্ধের গল্প।
সেই কিংবদন্তি শিল্পী আর নেই। গেল রবিবার (২৩ নভেম্বর) জ্যামাইকার কিংস্টনে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। পরিবার জানিয়েছে, শ্বাসরোধজনিত জটিলতা ও নিউমোনিয়ার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
জন্মসূত্রে জেমস চেম্বারস, জিমি ক্লিফ জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪৪ সালের ৩০ জুলাই জ্যামাইকার সেন্ট জেমস প্যারিশে—একটি প্রচণ্ড হারিকেনের মধ্যে। শিশুকালেই সংগীতের প্রতি টান তাকে নিয়ে যায় রাজধানী কিংস্টনে। ১৪ বছর বয়সেই ‘হারিকেন হ্যাটি’ গানটি তাকে দেশজুড়ে জনপ্রিয়তা এনে দেয়।
৬ দশকের ক্যারিয়ারে ক্লিফ রেকর্ড করেছেন ৩০টিরও বেশি অ্যালবাম। সংগীত পরিবেশন করেছেন প্যারিস, ব্রাজিল থেকে শুরু করে ১৯৬৪ সালের নিউইয়র্ক বিশ্বমেলা পর্যন্ত বিভিন্ন মঞ্চে। আইল্যান্ড রেকর্ডসের প্রতিষ্ঠাতা ক্রিস ব্ল্যাকওয়েল তাকে যুক্তরাজ্যে কাজের সুযোগ করে না দিলে হয়তো তার প্রতিভা আরও কিছুদিন আড়ালে থাকত।
তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় মোড় আসে ১৯৭২ সালে, পেরি হেনজেল পরিচালিত কালজয়ী চলচ্চিত্র “দ্য হার্ডার দে কাম”-এ অভিনয়ের মাধ্যমে। জ্যামাইকার কঠিন বাস্তবতা দেখিয়ে এই চলচ্চিত্র বিশ্বব্যাপী আলোচনায় আসার পাশাপাশি রেগে সংগীতের শক্তিকে নতুনভাবে তুলে ধরেছিল। পর্যটন দ্বীপ হিসেবে পরিচিত জ্যামাইকাকে এক অনন্য বাস্তবতায় দেখার সুযোগ করে দেয় এই সিনেমা—আর সেখানেই চিরঅমর হয়ে ওঠেন জিমি ক্লিফ।
জিমি ক্লিফের কণ্ঠ যতবার বাজবে, ততবার ফিরে আসবে—“ইউ ক্যান গেট ইট ইফ ইউ রিয়ালি ওয়ান্ট”, “মেনি রিভারস টু ক্রস”,এবং জনপ্রিয় কভার—‘আই ক্যান সি ক্লিয়ারলি নাউ’, ‘ওয়াইল্ড ওয়ার্ল্ড’।‘কুল রানিংস’ চলচ্চিত্রের সাউন্ডট্র্যাকেও তার কণ্ঠ ও সুরের শক্ত উপস্থিতি রেগে সংগীতকে আরও এক ধাপ এগিয়ে দেয়।
রেগে ইতিহাসে জিমি ক্লিফ শুধু শিল্পী নন—তিনি জ্যামাইকান সংস্কৃতির আত্মা, সংগ্রামের প্রতীক, আর বিশ্বসংগীতের বিগত ষাট বছরের অবিচ্ছেদ্য অধ্যায়।
