জাতিসংঘে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের বক্তব্য সমর্থন করে বিতর্কে

পপসংস্কৃতির আলোচিত মুখ নিকি মিনাজ আবারও বিতর্কের কেন্দ্রে। এবার তিনি পা দিলেন ধর্ম, রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সংবেদনশীল বিষয়ে। নিউইয়র্কে জাতিসংঘের এক অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতি সমর্থন করে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা নিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনার ঝড় উঠেছে।

মার্কিন গণমাধ্যম ভ্যারাইটি জানায়, ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতিনিধি হিসেবে জাতিসংঘে হাজির হয়ে মিনাজ দাবি করেন—নাইজেরিয়ায় খ্রিস্টানদের ওপর বিশেষভাবে হামলা হচ্ছে, মানুষ তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস পালনে ভয় পাচ্ছে।

রোলিং স্টোনের রিপোর্ট অনুযায়ী, তার বক্তব্য ছিল ট্রাম্পের অবস্থান ও বক্তব্যের প্রায় পূর্ণ সমর্থনে।

নিকি মিনাজ তার বক্তব্যে বলেন— “আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। নাইজেরিয়ার বহু অঞ্চলে বিশ্বাসের স্বাধীনতা আক্রমণের মুখে। খ্রিস্টানদের লক্ষ্য করে হামলা হচ্ছে… মানুষ শুধু প্রার্থনা করার কারণে ভয় নিয়ে বেঁচে আছে।”

এ বক্তব্যের পরই শুরু হয় বিতর্ক।

বিশেষজ্ঞ এবং আফ্রিকান অঞ্চলের গবেষকদের মতে, নাইজেরিয়ার সংঘাত কখনোই সরল ধর্মীয় যুদ্ধ নয়। দেশটির দক্ষিণে খ্রিস্টান আর উত্তরে মুসলিম জনগোষ্ঠী থাকলেও—মূল সমস্যা হলো জমি দখল,

জাতিগত দ্বন্দ্ব,সম্পদের নিয়ন্ত্রণ,দুর্বল প্রশাসন এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা।

এ সংঘাতে দুই পক্ষের মানুষই নিহত হয়েছেন। ফলে এটাকে খ্রিস্টান বনাম মুসলিম সংঘাত হিসেবে তুলে ধরা বিভ্রান্তি তৈরির শামিল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

আরও উল্লেখ করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের ডানপন্থী রাজনৈতিক মহল প্রায়ই “খ্রিস্টান নিপীড়ন” বক্তব্যকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে থাকে।  

ইভেন্টে তার সঙ্গে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতিসংঘ দূত মাইক ওয়াল্টজ। তিনি মিনাজকে “বিশ্বের সেরা নারী শিল্পী এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাহসী কণ্ঠ” হিসেবে প্রশংসা করেন।

মিনাজও বলেন— “এত বড় দায়িত্ব পাওয়ায় আমি কৃতজ্ঞ।”এ আলোচনার সঞ্চালনায় ছিলেন ফক্স নিউজের হ্যারিস ফকনার।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন—আন্তর্জাতিক মঞ্চে একজন বিশ্বখ্যাত তারকার পক্ষপাতমূলক মন্তব্য পরিস্থিতিকে আরও জটিল করতে পারে।

নাইজেরিয়ার দীর্ঘদিনের বাস্তব সমস্যাগুলো আড়ালে পড়ে যেতে পারে।

বিশ্বব্যাপী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও মিনাজের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় তুলছেন নেটিজেনরা। তাদের মতে, শিল্পীদের উচিত সংবেদনশীল বিষয়ে মন্তব্য করার আগে তথ্য যাচাই করা।