আর মাত্র এক ধাপ! বিশ্বজয়ের দোরগোড়ায় মিথিলা

থাইল্যান্ডের ফুকেটে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে চলছে ৭৪তম মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতা। এ আসরে বাংলাদেশের হয়ে লড়ছেন তানজিয়া জামান মিথিলা—যিনি দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিশ্ব প্রতিযোগিতায় ‘পিপলস চয়েস’ ক্যাটাগরিতে সেরা দুই-এ উঠে নজির গড়েছেন।

দু’দিন আগেই ভোটিং পুলে ৫ নম্বরে উঠে আলোচনায় আসেন মিথিলা। তারপর থেকে প্রতিদিনই নিজের অবস্থান আরও শক্ত করেছেন। অবশেষে বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকালে তিনি উঠে আসেন সেরা ২-এর মর্যাদাপূর্ণ স্থানে। এখন তিনি শুধু এক ধাপ দূরে—ভোটেই নির্ধারিত হবে তিনি সবার শীর্ষে উঠবেন কি না।

নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে সেরা দুইয়ে ওঠার খবর জানিয়ে মিথিলা লিখেছেন—“বাংলাদেশের ১০ লাখ মানুষ যদি প্রতিদিন ১০টা করে ভোট দেন, তাহলে ছয় দিনেই কয়েক কোটি ভোট পড়ে যাবে। ১৮-১৯ কোটি মানুষের দেশে শুধু ভোটের অভাবে যদি আমরা পেছনে পড়ে যাই—এটা মেনে নেওয়া যায়?”

তিনি আরও যোগ করেন—“১২১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ এখন ২ নম্বরে। মাত্র ৫০ হাজার ভোট পেলেই আমরা এক নম্বরে উঠে যাবো। আমি আত্মবিশ্বাসী—আপনাদের ভোটই হবে এই অর্জনের সবচেয়ে বড় শক্তি।”

ভোট দেওয়া যাবে আগামী ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত, বিশ্বের যেকোনো জায়গা থেকে।
কীভাবে ভোট দেবেন?
মিস ইউনিভার্স অ্যাপ ইনস্টল করুন

Country থেকে Bangladesh সিলেক্ট করুন
Get Vote → People’s Choice সেকশনে যান
তানজিয়া জামান মিথিলাকে নির্বাচন করুন
প্রতিটি বিজ্ঞাপন দেখলে যুক্ত হবে অতিরিক্ত ভোট
চাইলে অসীম সংখ্যক ভোট দেওয়া সম্ভব বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে।

বাংলাদেশি তারকারাও মিথিলার সঙ্গে একাত্ম হয়ে উঠেছেন। ভোট চাইতে পোস্ট দিয়েছেন—জয়া আহসান, রুনা খান, শবনম বুবলী, জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী, জান্নাতুল পিয়া, সামিরা খান মাহি, শবনম ফারিয়া, সালমান মুক্তাদির ও মুমতাহিনা টয়া। 

মডেলিং ও অভিনয় অঙ্গনের বহু তারকাই ক্যাম্পেইনে যোগ দিয়েছেন। সামাজিক মাধ্যমে এখন যেন একটাই সুর—“মুকুটটা ঘরে আনো, মিথিলা।”

মুকুটের পথে এখনো আরও ধাপ বাকি

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘পিপলস চয়েস’ আসরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ঠিকই—তবে এটি সরাসরি মূল প্রতিযোগিতায় সেরা হওয়ার নিশ্চয়তা দেয় না। আন্তর্জাতিক মঞ্চে মুকুট জিততে হলে মিথিলাকে আরও পাড়ি দিতে হবে বহু ধাপ, পারফর্ম করতে হবে বিভিন্ন সেগমেন্টে।
২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি অর্জন করেন মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ-এর মুকুট। মডেলিং–অভিনয়ের পাশাপাশি বাল্যবিবাহবিরোধী প্রচারণা ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের কল্যাণে কাজ করার জন্য তিনি পরিচিত।

২০২০ সালেও তিনি একই খেতাব জয় করলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে আন্তর্জাতিক পর্বে অংশ নিতে পারেননি। তাই এ যাত্রা তার কাছে আরও বর্ণিল ও আবেগের।

ফুকেট থেকে মিথিলা বলেন—“স্বপ্নের মতো লাগছে। দেশের মানুষের ভালোবাসা আমাকে বিস্মিত করছে। যত ভোট পড়ছে, ততই মনে হচ্ছে—আমার দেশের মানুষের জন্য আরও অনেক কিছু করা উচিত।”

মুকুট জয় নিয়ে তার ভাষা—“আমি ভয় পাই না। বাংলাদেশ পারবে—আমি নিশ্চিত। লক্ষ্য একটাই: দেশের নামটা বিশ্বমঞ্চে আরও উজ্জ্বল করা।”

বিশ্ব প্রতিযোগিতার বাইরেও মিথিলা যুক্ত হয়েছেন বলিউডের দুটি সিনেমা—‘রোহিঙ্গা’ ও ‘লাইফ’—এ। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তার উপস্থিতি এখন বাংলাদেশের গর্বের বিষয়।