কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব শুরু হলো, এবার‌ও নেই বাংলাদেশ

ভারতে ৩১তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের পর্দা উঠল এক আবেগঘন সন্ধ্যায়। বৃহস্পতিবার ধনধান্য অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এই উৎসবের উদ্বোধন করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার বক্তব্যে উঠে এল মানবতার এক সার্বজনীন আহ্বান— “পৃথিবী একটাই, আমরাও এক। সিনেমাই সেই বন্ধন, যা সীমানা মানে না।”

চলচ্চিত্রে বিশ্বসংস্কৃতির মেলবন্ধন

এবারের উৎসবে ৩৯টি দেশ থেকে অংশ নিয়েছে অসংখ্য চলচ্চিত্র। প্রদর্শিত হবে ৩১৫টিরও বেশি ছবি— যেখানে একই পরিসরে মিলবে ইউরোপীয়, এশীয়, আফ্রিকান ও ভারতীয় চলচ্চিত্র ঐতিহ্যের সমৃদ্ধ মিশেল।

মমতা বলেন, “সিনেমা পৃথিবীকে একসূত্রে বাঁধে, মানবতাকে দৃঢ় করে। এর কোনও সীমানা নেই।”

-আরতি মুখোপাধ্যায় পেলেন ‘বঙ্গবিভূষণ’

উদ্বোধনী মঞ্চে বাংলার সঙ্গীতজগতের গর্ব আরতি মুখোপাধ্যায়-এর হাতে রাজ্যের সর্বোচ্চ সম্মান ‘বঙ্গবিভূষণ’ তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। আবেগভরা কণ্ঠে মমতা বলেন, “আরতিদি আমাদের অনেক কিছু দিয়েছেন। আমরা তাঁকে যথাযথ সম্মান দিতে পারিনি। আজকের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের গর্ব।”

উৎসবের অংশ হিসেবে শতবর্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানো হচ্ছে কিংবদন্তি চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটক, রিচার্ড বার্টন, স্যাম পেকেনপা, সন্তোষ দত্ত, সলিল চৌধুরী ও রাজ খোসলাকে।

বিশেষভাবে প্রদর্শিত হবে ঋত্বিক ঘটকের ‘অযান্ত্রিক’, *‘বাড়ি থেকে পালিয়ে’*সহ সাতটি চলচ্চিত্র।

নন্দনে অনুষ্ঠিত হবে বিশেষ প্রদর্শনী ‘দ্য সাবঅল্টার্ন ভয়েস’।

এছাড়া, সত্যজিৎ রায় স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠিত হবে ৭ নভেম্বর শিশির মঞ্চে, যেখানে বক্তব্য রাখবেন ‘শোলে’ খ্যাত পরিচালক রমেশ সিপ্পি।

আঞ্চলিক ও ক্লাসিক সিনেমার সম্মাননা

মুখ্যমন্ত্রী জানান, এবার উৎসবে দেখানো হবে মহানায়ক উত্তম কুমার ও সুচিত্রা সেনের ক্লাসিক ‘সপ্তপদী’। পাশাপাশি থাকবে বোরো ও টুলু ভাষার আঞ্চলিক চলচ্চিত্রও।

তার কথায়, “যাদের ভাষা হয়তো অনেকেই বোঝেন না, তাঁদের হৃদয় খুব সুন্দর। তাদের এই বার্তা দেওয়া হচ্ছে— তোমরা একা নও, পৃথিবী তোমাদের সঙ্গে আছে।”

সিনেমা মানেই মানবতার বার্তা

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার বক্তব্যে বলেন,“সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক, মৃণাল সেন, উত্তম কুমার, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়— এদের জন্যই বাংলা সিনেমা বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত। সিনেমাই আজ মানবতার ভাষা, যা এক করে দেয় গোটা পৃথিবীকে।”