আর্থিক তছরুপের মামলায় নয়া মোড়
শিল্পা শেট্টি ও রাজ কুন্দ্রার বিরুদ্ধে তদন্তে নতুন তথ্য উদঘাটন
বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ২০:২৪, ৭ অক্টোবর ২০২৫
বলিউড অভিনেত্রী শিল্পা শেট্টি এবং তার স্বামী রাজ কুন্দ্রা-র বিরুদ্ধে আনা ৬০.৪০ কোটি টাকার আর্থিক প্রতারণা মামলায় তদন্তে নতুন অগ্রগতি হয়েছে। মুম্বই পুলিশের ইকোনমিক অফেন্স উইং (EOW) সম্প্রতি অভিনেত্রীর বাসভবনে গিয়ে তাঁকে টানা চার ঘণ্টা ধরে জেরা করেছে। এ সময় পুলিশের দল মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন আর্থিক নথি ও ব্যাংক লেনদেনের কাগজপত্র সংগ্রহ করে।
৬০.৪০ কোটি টাকার বিনিয়োগের ফাঁদ
মামলাটি শুরু হয় দীপক কোঠারি নামের এক ব্যবসায়ীর অভিযোগে। তিনি লোটাস ক্যাপিটাল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড-এর পরিচালক। অভিযোগ অনুযায়ী, ২০১০ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে শিল্পা ও রাজ তাঁদের ‘বেস্ট ডিল টিভি প্রাইভেট লিমিটেড’ নামের অনলাইন শপিং সংস্থার ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য ৭৫ কোটি টাকার ঋণ চেয়েছিলেন।
কিন্তু পরে তাঁরা সেই ঋণকে ‘বিনিয়োগ’ হিসেবে দেখানোর অনুরোধ করেন, যাতে কর ফাঁকি দেওয়া যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে, দুটি ধাপে মোট ৬০.৪০ কোটি টাকা কোম্পানির অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত হয়—
- প্রথম কিস্তি: ৩১.৯৫ কোটি টাকা (এপ্রিল ২০১৫)
- দ্বিতীয় কিস্তি: ২৮.৫৩ কোটি টাকা (সেপ্টেম্বর ২০১৫)
লেনদেনটিকে বৈধ দেখাতে তাঁরা ৩.১৯ লক্ষ টাকার স্ট্যাম্প ডিউটিও পরিশোধ করেছিলেন।
অভিযোগকারী কোঠারি জানিয়েছেন, দম্পতি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, বিনিয়োগের মাসিক রিটার্ন দেবেন এবং মূল অর্থ ফেরত দেবেন। কিন্তু ২০১৫ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত দীর্ঘ সময়ে তাঁরা নানা অজুহাতে অর্থ ফেরত দিতে ব্যর্থ হন।
সবশেষে জানা যায়, শিল্পা ও রাজ সেই অর্থ ব্যবসার কাজে নয়, বরং ব্যক্তিগত বিলাসিতায় ব্যবহার করেছেন। এর পরই তিনি প্রতারণা, বিশ্বাসভঙ্গ ও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মামলা দায়ের করেন।
২০২৫ সালের আগস্টে মুম্বই পুলিশের ইওডব্লিউ দম্পতির বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে এবং সেপ্টেম্বরে লুকআউট সার্কুলার জারি করে তাঁদের বিদেশযাত্রা নিষিদ্ধ করে। ১৫ সেপ্টেম্বর রাজ কুন্দ্রার বয়ান গোপনে রেকর্ড করা হয়।
এরপর সম্প্রতি, তদন্তকারীরা শিল্পা শেট্টির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাঁকে চার ঘণ্টা ধরে জেরা করেন। একজন জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা জানান, “শিল্পার বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে এবং তাঁর ব্যাঙ্ক লেনদেন, কোম্পানির শেয়ার সংক্রান্ত কাগজপত্র জব্দ করা হয়েছে।”
বর্তমানে ইওডব্লিউ দল সমস্ত আর্থিক নথি বিশ্লেষণ করছে এবং দম্পতির সম্পত্তি ও ব্যাংক লেনদেনের উপর নজরদারি বাড়িয়েছে। সূত্রের দাবি, প্রাথমিক তদন্তে একাধিক অস্বচ্ছ লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এই মামলার পরবর্তী ধাপেই নির্ধারিত হবে শিল্পা ও রাজের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক চার্জশিট দাখিল করা হবে কিনা।
