সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:১৬, ৫ ডিসেম্বর ২০২৫
টাঙ্গাইলের গোপালপুরে প্রাথমিক শিক্ষকদের কমপ্লিট শাটডাউন। ছবি: সংগৃহীত
দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা চলমান ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার পর আন্দোলনকারী শিক্ষক নেতারা জানান, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্বার্থে বার্ষিক পরীক্ষা চলাকালীন এই কর্মসূচি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাতেই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে।
শিক্ষকরা তিন দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন।
দেশের ৬৫ হাজারের বেশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক কোটিরও বেশি শিক্ষার্থী পাঠ নেয়, যেখানে কর্মরত আছেন প্রায় সাড়ে তিন লাখ শিক্ষক।
বর্তমানে সহকারী শিক্ষক পদে অনুমোদিত গ্রেড ১৩ হলেও আন্দোলনকারী সংগঠনগুলো দাবি করছে জাতীয় বেতন স্কেলে অন্তত ১১তম গ্রেড প্রদান, চাকরির ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেডের জটিলতা নিরসন এবং সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির সুযোগ নিশ্চিত করার।
গত ২৭ নভেম্বর থেকে ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’ কর্মবিরতি শুরু করে এবং সোমবার থেকে বার্ষিক পরীক্ষা বর্জনের ডাক দেয়। পরে বুধবার থেকে অনেক বিদ্যালয়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কার্যকর হয়।
একই দাবি নিয়ে অন্য একটি সংগঠন ‘সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ’ও একই কর্মসূচি নেয়।
ফলে বৃহস্পতিবার টানা চতুর্থ দিনের মতো দেশের বিপুলসংখ্যক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা সম্পূর্ণভাবে ব্যাহত হয়। কোথাও শিক্ষকরা বিদ্যালয়ের গেটে নিজেরাই তালা ঝুলিয়ে দেন; কোথাও স্থানীয় প্রশাসন তালা ভেঙে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করে। কিছু ক্ষেত্রে পুলিশ ও আনসার মোতায়েন করে পরীক্ষা নেওয়া হয়। তবে উত্তরপত্র মূল্যায়ন সঠিকভাবে হবে কি না, তা নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দেয়।
এই পরিস্থিতিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় কঠোর অবস্থান নেয়। শিক্ষক নেতাসহ বেশ কিছু সংখ্যক শিক্ষকের বদলি–সংক্রান্ত নির্দেশনা ‘প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত’ হিসেবে জারি করা হয়।
পরিস্থিতি জটিল হওয়ার প্রেক্ষাপটে শিক্ষকরা পরীক্ষার্থীদের ক্ষতির কথা বিবেচনা করে শাটডাউন স্থগিতের ঘোষণা দেয়।
তবে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, দাবি আদায়ে পরীক্ষার পর নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
