বার্ষিক পরীক্ষা বর্জনের হুঁশিয়ারি সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের

দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের একাংশের তিন দিন ধরে চলা কর্মবিরতি আজ বৃহস্পতিবার শেষ হওয়ার কথা। তবে এর মধ্যেই আজ থেকে আরেকটি শিক্ষক সংগঠরে ব্যানারে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা লাগাতার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি শুরু করেছে। ফলে দেশে প্রাথমিক শিক্ষায় নতুন করে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।

সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা দশম গ্রেড থেকে নবম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, দ্রুত স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর গঠনসহ চার দাবিতে রাজধানীর আব্দুল গণি রোডে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের কার্যালয় 'শিক্ষা ভবন' চত্বরে অবস্থান নিয়েছেন।

দাবি বাস্তবায়নে সরকারকে রবিবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন তারা। তা না হলে সোমবার থেকে বার্ষিক পরীক্ষা ও ভর্তি কার্যক্রম বর্জন করে সাত শতাধিক সরকারি স্কুলে 'শাটডাউন' ঘোষণার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন সরকারি স্কুল থেকে আসা শিক্ষকরা 'সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির' ব্যানারে শিক্ষা ভবন চত্বরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।

বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহাব উদ্দিন মাহমুদ সালমী বলেন, "পদোন্নতি যোগ্য একটি মাত্র পদ থাকায় সহকারী শিক্ষকরা দীর্ঘদিন পদোন্নতি পাচ্ছেন না। বর্তমান বাস্তবতায় দশম গ্রেডে বেতনে শিক্ষকরা হিমশিম খাচ্ছেন। তাই আমরা চাই 'সহকারী শিক্ষক' পদটি নবম গ্রেডে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত করে দ্রুত সময়ে মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর গঠন করে গ্রেজেট প্রকাশ হোক। এ অধিদপ্তর গঠন করে শিক্ষকদের পদগুলো ক্যাডারভুক্ত করলে আমরা অন্যান্য প্রশাসনিক পদে পদান্নতির সুযোগ পাব।"

শিক্ষকদের বাকি দাবিগুলো হল–

১. বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখায় কর্মরত শিক্ষকদের বিভিন্ন শূন্যপদে নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন।

২. সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আলোকে ৩ কর্মদিবসের মধ্যে বকেয়া টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের মঞ্জুরি আদেশ দেওয়া।

৩. ২০১৫ সালের আগের মত সহকারী শিক্ষকদের ৩/২টি ইনক্রিমেন্টসহ অগ্রিম বর্ধিত বেতন সুবিধা বহাল করে গেজেট প্রকাশ।

রোববার পর্যন্ত সরকারকে দাবি মেনে নিতে সময় দেওয়ার কথা তুলে ধরে শিক্ষক নেতা শাহাব উদ্দিন মাহমুদ সালমী বলেন, "এর মধ্যে চার দফা দাবি আদায় না হলে সোমবার (১ডিসেম্বর)) থেকে চলমান বার্ষিক পরীক্ষা, ভর্তি কার্যক্রমসহ সকল ধরনের কার্যক্রম বর্জন করে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে কমপ্লিট শাটডাউন পালন করব।"

প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, দেশে ৭২১টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৬৫,৫৬৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে রবিবার থেকে বার্ষিক পরীক্ষা শুরু। এমন অবস্থায় শিক্ষকদের এই কর্মবিরতির কারণে স্কুলগুলোতে বার্ষিক পরীক্ষায় বিঘ্নের আশঙ্কা করছেন শিক্ষকরা।