শিক্ষার্থীদের বাড়ি পৌঁছে দিতে পরিবহন ব্যবস্থা

সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া আতঙ্কের পরিপ্রেক্ষিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) আগামী সাত দিনের জন্য সকল ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত একাডেমিক কার্যক্রম ৩০ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনলাইনে অনুষ্ঠিত হবে। একই সময়ে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ও উন্মুক্ত লাইব্রেরি বন্ধ থাকবে এবং শিক্ষার্থীদের পরিবহনসেবা স্থগিত করা হবে। তবে প্রশাসনিক কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলবে।

রবিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার, বিভিন্ন অনুষদের ডীন, ইনস্টিটিউট পরিচালক, রেজিস্ট্রার, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও প্রক্টরসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

২৭ নভেম্বর পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ, ছাত্রী হল খালি করার নির্দেশ
সভায় শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত সব ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র আবাসিক নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী ছাত্রী হল সোমবার সকাল ১০টার মধ্যে খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অবকাঠামো ঝুঁকি যাচাইয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটি
ক্যাম্পাসের ভবনগুলো ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কি না তা মূল্যায়নের জন্য বুয়েটের বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদের ডিনকে আহ্বায়ক করে গঠিত এই কমিটি ৩ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে। পরদিন ৪ ডিসেম্বর আবার সভা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ পরিবহন ব্যবস্থা
শিক্ষার্থীদের নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দিতে বিশ্ববিদ্যালয় বিশেষ পরিবহন ব্যবস্থা করেছে। পরিবহন পুলের বাসগুলো সোমবার সকাল থেকে বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে শিক্ষার্থীদের পৌঁছে দেবে—এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক ড. তারেক বিন আতিক।

জকসু নির্বাচন নিয়ে আলোচনা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচন নিয়েও সভায় আলোচনা হয়। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সোমবার সিদ্ধান্ত নেবে এবং প্রয়োজনীয় কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।

প্রক্টরের বক্তব্য
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, “শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ভবনগুলো বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হবে এবং সবার সঙ্গে আলোচনা করেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

ভূমিকম্পজনিত সম্ভাব্য ঝুঁকি এড়াতে এই সতর্কতামূলক সিদ্ধান্তকে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা স্বাগত জানিয়েছেন।