ক্যাম্পাসে যৌন হয়রানি ‘শূন্যের কোটায়’ আনতে উদ্যোগী ইউজিসি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৭:২৬, ৬ নভেম্বর ২০২৫
ছবি: ইউজিসি ও ইউএন উইমেন-এর সৌজন্যে।
দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি ও জেন্ডার-ভিত্তিক সহিংসতা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)-এর সদস্য প্রফেসর ড. মাছুমা হাবিব।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত কর্মশালা ‘ক্যাম্পাসে যৌন হয়রানি ও জেন্ডার-ভিত্তিক সহিংসতা অবসানে চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণ’-এ তিনি এসব কথা বলেন। কর্মশালাটি যৌথভাবে আয়োজন করে ইউজিসি ও ইউএন উইমেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর মাছুমা হাবিব বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটিতে নারীদের নেতৃত্বে আনা জরুরি। এতে শিক্ষার্থীদের আস্থা বাড়বে এবং অভিযোগ নিষ্পত্তি হবে দ্রুত।”
তিনি আরও বলেন, নিরাপদ ক্যাম্পাস গঠন, জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং ‘হোল অব স্কুল এপ্রোচ’ মডেলকে অনুসরণ করলে যৌন হয়রানি রোধে তা কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
বিশেষ অতিথি ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আইয়ুব ইসলাম বলেন, “উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ গড়তে হলে শুধু নীতিমালা নয়, আচরণ ও মানসিকতার পরিবর্তনও জরুরি। ইউজিসি ইতোমধ্যে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সক্ষমতা উন্নয়নে কাজ করছে।”
অনুষ্ঠানের সভাপতি এবং ইউজিসি’র আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিভাগের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) জেসমিন পারভিন জানান, “ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে এবং ইউএন উইমেনের কারিগরি সহায়তায় তিন বছর মেয়াদি একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।”
এই প্রকল্পের আওতায় নারীর জন্য নিরাপদ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মপরিবেশ, জেন্ডার-সংবেদনশীল দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলা, এবং প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা শক্তিশালী করা হবে।
কর্মশালায় দেশের ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটির প্রধান, আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)-এর প্রতিনিধি এবং শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
তারা আলোচনায় ‘জিরো টলারেন্স নীতি’ প্রণয়ন, সিন্ডিকেট সভার অনুমোদনে প্রতিরোধ সেল গঠন, বাজেট বরাদ্দ ও ওয়েবসাইটে দৃশ্যমানতা বৃদ্ধি, এবং মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা কমিটি গঠনসহ নানা প্রস্তাব দেন।
ইউএন উইমেনের প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর শ্রবণা দত্ত এবং প্রোগ্রাম অ্যানালিস্ট তোসিবা কাশেম ক্যাম্পাসে যৌন হয়রানি ও জেন্ডার-ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে ‘হোল অব স্কুল এপ্রোচ’ নিয়ে সেশন পরিচালনা করেন।
ইউজিসি’র এই উদ্যোগকে শিক্ষাবিদরা স্বাগত জানিয়ে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিরাপত্তা, সম্মান ও সমতার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে এই কর্মসূচি কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
